২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৭ তারিখে ইয়র্কশায়ারের মিডলসবোরায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, দলের প্রয়োজনে মাঝে-মধ্যে ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে অগ্রসর হতেন। ১৯৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আট বছর সময়কাল অতিবাহিত করেছেন। তবে, থেমে থেমে বা আসা-যাবার পালায় ছিলেন ও সাধারণমানের খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ফলে, ধারাবাহিক ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করতে পারেননি। খেলোয়াড়ী জীবনের শেষ পর্যন্ত শীর্ষসারির সম্ভাবনাময় খেলোয়াড় হিসেবে থাকলেও ইংল্যান্ডের ক্রিকেট জগতে সর্বাপেক্ষা অপূর্ণাঙ্গ খেলোয়াড় হিসেবে রয়ে যান। ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে দূর্দান্ত খেললেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তা ধরে রাখতে পারেননি। মাঠের বহিরাংশে দূর্দান্ত ফিল্ডিং করতেন।
‘জেকিল’, ‘বাম্পার’ কিংবা ‘উইংনাট’ ডাকনামে ভূষিত বিল অ্যাথে ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী। অ্যাকলাম হল হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৯৭ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্লুচেস্টারশায়ার, ওরচেস্টারশায়ার, সাসেক্স ও ইয়র্কশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, সাফোকের পক্ষে খেলেছেন।
ইয়র্কশায়ারের দ্বিতীয় একাদশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। পরবর্তীকালে ইংল্যান্ডের রাগবি ইউনিয়নের খেলোয়াড় পিটার স্কুইর্সের সাথে প্রায়শঃই শতরানের জুটি গড়তেন। ১৯ বছর বয়সেই ইয়র্কশায়ারের প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। খুব শীঘ্রই জিওফ্রে বয়কটের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে বিবেচিত হতে থাকেন। পাশাপাশি টিসিসিবি’র নজরে পড়েন। ১৯৭৬ সালে ইয়ান বোথাম, মাইক গ্যাটিং ও গ্রাহাম স্টিভেনসনের সাথে চার তরুণ খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে ভবিষ্যৎ ইংরেজ তারকা খেলোয়াড়ের মর্যাদা পান। হুইটব্রেড ইয়ং প্লেয়ার স্কলারশিপের অধীনে অস্ট্রেলিয়ায় তিন মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্যে মনোনীত হন। পরবর্তী সাত মৌসুমে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে ১০ শতক সহযোগে ছয় সহস্রাধিক রান তুলেছিলেন।
২১ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। বয়সের সাথে সাথে ঘরোয়া ক্রিকেটে সফলতম খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করতে থাকলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এর ব্যতিক্রম ছিল। ১৯৭৬ সালে নিজ কাউন্টি ইয়র্কশায়ারের পক্ষে আট বছর প্রতিনিধিত্ব করার পর ১৯৮৪ সালে গ্লুচেস্টারশায়ারের চলে যান ও খেলার ধারা পরিবর্তিত হতে থাকে। এ পর্যায়ে ইয়র্কশায়ারে ক্রমাগত রাজনৈতিক প্রভাবে আচ্ছাদিত হন ও কয়েক মৌসুম রান খরায় ভুগেছিলেন। ১৯৮৩ সালে জিওফ বয়কট ও কমিটির কোপানলে পড়েন এবং চুক্তি নবায়ণে অগ্রসর হয়নি। আত্মজীবনীকার লিও ম্যাককিনস্ট্রি’র কাছে মন্তব্য করেন যে, বয়কটের দৃষ্টিভঙ্গী ও পরিবেশ প্রতিকূলে চলে যাবার ফলে ইয়র্কশায়ার ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। দুই বছর পর ইংল্যান্ড দলে খেলার সুযোগ পান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সফল হন।
১৯৮৯ সালে গ্লুচেস্টারশায়ারের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে উপর্যুপরী চারটি শতক হাঁকিয়েছিলেন। তবে রান খরায় ভুগতে থাকায় ১৯৯৩ সালে সাসেক্সে খেলেন। কয়েক মাস পরই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৫,০০০ রান সংগ্রহের ব্যক্তিগত মাইলফলক স্পর্শ করেন। ১৯৯৭ সালে সমারসেটের বিপক্ষে অপরাজিত শতক হাঁকানোকালে এ কৃতিত্বের অধিকারী হন।
১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত আট বছরের অধিক সময় নিয়ে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ২৩ টেস্ট ও ৩১টি ওডিআইয়ে অংশ নেন। কেবলমাত্র ১৯৮৬-৮৭ মৌসুম বাদে বাদ-বাকী সময়ই দলের অনিয়মিত খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছিলেন। তন্মধ্যে, ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের পক্ষে ব্যাট হাতে দারুণ খেলেন। এ পর্যায়ে ২০ টেস্টে অংশ নেন ও একটিতে অনুপস্থিত থাকেন। জুন, ১৯৮৬ থেকে ডিসেম্বর, ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত রান সংগ্রহের ধারা খেলোয়াড়ী জীবনের গড় রানের চেয়ে কিছুটা উঁচুতে চলে আসে।
১৯৮০ সালে ১১২৩ রান সংগ্রহের মাধ্যমে ইয়র্কশায়ারের ক্যাপ লাভসহ ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলার সুযোগ পান। ঐ বছরই নিজ দেশে গ্রেগ চ্যাপেলের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ২৮ আগস্ট, ১৯৬৮ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত শতবার্ষিকী টেস্টে সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। প্রথম তিনদিন থেমে থেমে বৃষ্টির কবলে পড়ে। ২৮ আগস্ট, ১৯৮০ তারিখে জন আর্লটের শেষবারের মতো মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে ধারাভাষ্যকর্মে ইংল্যান্ডের পক্ষে প্রথম খেলেন। নয় ও এক রান তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিম হিউজের অসাধারণ ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।
ফলে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনার্থে তাঁর দলে স্থান অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। অথচ, এক সপ্তাহ পূর্বে ডেনিস লিলি, জেফ থমসন ও লেন পাস্কো’র ন্যায় তারকা বোলারদের মোকাবেলা করে দুইটি ওডিআই থেকে ৩২ ও ৫১ রানে ইনিংস খেলেছিলেন। আট বছর পর সিডনিতে দ্বি-শতবার্ষিকী টেস্টে জন এম্বুরি ও মাইক গ্যাটিংয়ের সাথে একত্রে অংশ নিয়েছিলেন।
অধিনায়কের দায়িত্বে থাকাকালীন ইয়ান বোথাম মিডলসেক্সের ব্যাটসম্যান রোনাল্ড বুচারের পরিবর্তে বিস্ময়করভাবে বিল অ্যাথেকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করেন। এর কারণ হিসেবে তাঁর কৌশল গ্রহণে ভূমিকা ও প্রতিপক্ষীয় পিচে অতিরিক্ত পেস মোকাবেলায় স্ট্রোক খেলার দক্ষতাকে বিবেচনায় এনেছিলেন। তবে, দল নির্বাচকমণ্ডলী সফরকারী দলে তাঁর উপযোগিতার বিষয়ে প্রশ্ন তুললে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। অবশেষে, রোনাল্ড বুচারকে দলে রাখার বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয় ও বিল অ্যাথেকে সংরক্ষিত খেলোয়াড়ের মর্যাদা দেয়া হয়। ব্রায়ান রোজের আঘাতে সিরিজের বাদ-বাকী খেলায় অংশগ্রহণের জন্যে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
অ্যান্টিগুয়া ও জ্যামাইকায় সিরিজের শেষ দুই টেস্টে অংশ নেয়ার সুযোগ পান। চার ইনিংস থেকে মাত্র সাত রান তুলতে সমর্থ হন ও ইয়ান বোথাম বিব্রত অবস্থায় পড়েন। এরপর থেকেই তিনি পর্দার অন্তরালে চলে যান। বোথামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হলেও দল নির্বাচকমণ্ডলী পুণরায় তাঁর দিকে মনোনিবেশ ঘটাতে শুরু করেন। এ পর্যায়ে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে নিয়মিতভাবে রান সংগ্রহ করতে তৎপর ছিলেন। তবে, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে পূর্বেকার সফরে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতির বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হলে দলে ফিরে আসতে পারেননি ও পরবর্তী পাঁচ বছরে ইংরেজ দলের বাইরে অবস্থান করেন।
১৯৮০ ও ১৯৮১ সালে মোট তিন টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। তিন নম্বর অবস্থানে থেকে ছয় ইনিংসে মাত্র ১৭ রান তুলতে পেরেছিলেন। ১৯৮২ সালে বর্ষসেরা তরুণ ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন। ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে ১৩৪ রানের ইনিংস খেলেন।
মাইক গ্যাটিংয়ের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্য থেকে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমের গ্রীষ্মকালে অ্যাশেজ বিজয়ী দলের সদস্য থেকে স্বীয় প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। মাঝারিসারি থেকে উদ্বোধনী অবস্থানে চলে আসেন। এ পর্যায়ে দুই দিনের ব্যবধানে জন্মগ্রহণকারী ক্রিস ব্রডের সাথে শীর্ষসারিতে দৃশ্যতঃ স্থিরতা এনেছিলেন। প্রস্তুতিমূলক খেলাগুলোয় তেমন সুবিধে করতে না পারলেও ব্রিসবেনে সিরিজের প্রথম দিনে ইনিংস উদ্বোধনে নেমে ইংল্যান্ডের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিলেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত পিচে ক্রমশঃ বিপজ্জ্বনক হয়ে উঠা ব্রুস রিডের ন্যায় বোলারদের মোকাবেলা করে ৭৬ রান তুলেন। এরপর, ইয়ান বোথামের শতকের উপর ভর করে সফরকারীরা টেস্টে জয়সহ সিরিজে বিজয়ী হয়। পার্থের দ্রুত গতিসম্পন্ন পিচে ৯৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এরপর, অ্যাডিলেডে আরও একটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা অবস্থায় মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত চতুর্থ টেস্টে জয় পায়। তবে, তিনি মাত্র ২১ রান তুলতে পেরেছিলেন। ঐ সিরিজ শেষে তিনটি অর্ধ-শতক সহযোগে ৩৩.৬৬ গড়ে ৩০৩ রান তুলেছিলেন।
ক্ষুদ্রতর সংস্করণের খেলায় অধিক সফল ছিলেন। ১৯৮৬ সালে দেশে ফেরার পর জেরেমি কোনি’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে খুব সহজেই জয় এনে দেন। প্রথম উইকেটে গ্রাহাম গুচকে সাথে নিয়ে ১৯৩ রান তুলে সর্বোচ্চ জুটি গড়েন। ত্রি-দেশীয় বেনসন এন্ড হেজেস বিশ্ব সিরিজ কাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১১১ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬৪ রান তুলেছিলেন।
একই সফরের ২৪ জুলাই, ১৯৮৬ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ৩৯ রানে পৌঁছানোকালে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ রান অতিক্রম করেন। ৪৪ ও ১৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, গ্রাহাম গুচের অসামান্য অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
১৯৮৭ সালের গ্রীষ্মে লর্ডসে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে নিজস্ব প্রথম ও একমাত্র শতরানের সন্ধান পান। তিন নম্বর অবস্থানে থেকে ১২৩ রানের ইনিংস খেলেন। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে দলের স্থায়ী সদস্যের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। ঐ টেস্টে মাত্র দুইদিন খেলা সম্ভব হলে ড্রয়ে পরিণত হয়। সব মিলিয়ে ২৩ টেস্টে অংশ নিয়ে এ সাফল্য পান। দলীয় সংগ্রহ ২৯/১ হলে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০২ বল মোকাবেলা করে এ রান তুলেন। এ পর্যায়ে তিনি সোয়া পাঁচ ঘণ্টা ক্রিজে অবস্থান করেন ও চৌদ্দটি চারের মার মারেন। এ শতকের কল্যাণে লর্ডস অনার্স বোর্ডে স্বীয় নামকে অন্তর্ভুক্ত রাখতে সমর্থ হন।
মাইক গ্যাটিংয়ের অধিনায়কত্বে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ঐ মৌসুমের শীতকালে পাকিস্তান সফরে আব্দুল কাদিরের বলে যথেষ্ট নাকানি-চুবানির শিকারের পরিণত হন। পরবর্তী দুই মৌসুমে খেলার মান বেশ দূর্বলতর হতে থাকে। আট খেলায় অংশ নিয়ে ৩৭ রানের কোটা অতিক্রম করতে না পারায় সর্বশেষবারের মতো দল থেকে বাদ পড়েন। বিশ্বকাপের পর তাঁর খেলার মান নিচে চলে যায়। পরবর্তী পাঁচটি ওডিআইয়ে ৩০ রান স্পর্শ করতে পারেননি। টেস্টে সর্বোচ্চ করেন ৩৭ রান।
ওডিআই ক্রিকেটে তেমন সফলতা পাননি। দুইটি শতকের সন্ধান পেয়েছেন। তাসত্ত্বেও, ক্ষুদ্রতর সংস্করণের খেলায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ধ্রুপদীশৈলীর ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। ১৪২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের ২৮৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা সফলতার সাথে টপকে যায়। এছাড়াও, ব্রিসবেনে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আরেকটি শতক হাঁকিয়েছিলেন।
১৯৮৭ সালের রিলায়েন্স বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯৬ রান তুলে যাত্রা শুরু করেন। এ পর্যায়ে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন। এরপর, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২১ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৪০ রান করেন। কলকাতায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চূড়ান্ত খেলায় অংশ নেন। ৫৮ রান তুলে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীতে পরিণত হন। তৃতীয় রান সংগ্রহকালীন ২২ বছর বয়সী স্টিভ ওয়াহ তাঁকে রান-আউটে বিদেয় করেন। তাসত্ত্বেও কলকাতায় লক্ষাধিক দর্শকের উপস্থিতিতে পরাজিত হয়। ১৯৮৮ সালে গ্রাহাম গুচ দলে ফিরে আসলে তাঁকে স্থানচ্যূত হতে হয়।
১৯৮৮ সালে নিজ দেশে ভিভ রিচার্ডসের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ২১ জুলাই, ১৯৮৮ তারিখে ৩১ বছর বয়সে লিডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ টেস্টে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেন। খেলায় তিনি ১৬ ও ১১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। কার্টলি অ্যামব্রোসের দূর্দান্ত বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ১০ উইকেটে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। সর্বশেষ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন।
২৩ টেস্ট ও ৩১টি ওডিআইয়ে অংশ নিলেও কোন স্তরের ক্রিকেটেই সহস্র রানের কোটায় পৌঁছুতে পারেননি। কিন্তু, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পঁচিশ হাজারের অধিক রান তুলেছিলেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে অংশগ্রহণকৃত খেলার চেয়েও অধিক খেলার সুন্দর সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র ছিল। অংশগ্রহণকৃত ২৩ টেস্টের ৪১ ইনিংস থেকে মাত্র পাঁচবার অর্ধ-শতকের কোটা স্পর্শ করতে পেরেছিলেন। ২২.৯৭ গড়ে ৯১৯ রান তুলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেসারসহ বিশ্বের সেরা বোলারেরাই কেবলমাত্র তাঁর রক্ষণভাগ গুড়িয়ে দিতে সমর্থ হয়েছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪৬৭ খেলায় অংশ নিয়ে ৩৫.৬৯ গড়ে ২৫৪৫৩ রান তুলেছিলেন।
১৯৯০ সালে বিদ্রোহী খেলোয়াড় হিসেবে তৎকালীন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিষিদ্ধ ঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ফলশ্রুতিতে, খেলা থেকে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন। দুই বছর পর দলটি বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে খেলার সুযোগ পেলে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। তবে, তিনি আর দলে ফিরে আসেননি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে উপেক্ষিত হলেও কাউন্টি পর্যায়ে রান তোলা অব্যাহত রেখেছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে বেশ সফল ছিলেন। ৪৬৭টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৫৫টি শতক সহযোগে ২৫৪৫৩ রান তুলেছেন। এছাড়াও, লিস্ট-এ ক্রিকেটে ১৩২৪০ রান সংগ্রহ করেছেন। ১৯৯৭ সালের শেষদিকে সকল স্তরের ক্রিকেটকে বিদেয় জানান ও খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর, কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন।
ওরচেস্টারশায়ারের কোচ হিসেবে নিযুক্ত হন। দূর্বলমানের ফলাফলের কারণে ন্যাশনাল লীগের শীর্ষবিভাগ থেকে অবনমনের কবলে পড়ে। ফলশ্রুতিতে, তিন বছর পর ২০০০ সালের শেষ দিকে নিউ রোড ত্যাগ করে এ দায়িত্ব থেকে তাঁকে চলে আসতে হয়েছে ও কত তারিখে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে তা অজানাই রয়ে গেছে।
খেলার সাথে সম্পর্ক ধরে রাখার লক্ষ্যে আম্পায়ারিত্বের দিকেও ঝুঁকে পড়েন। নতুন দায়িত্ব গ্রহণের প্রশ্নে দ্য গার্ডিয়ানের জবাবে তিনি মন্তব্য করেন যে, ‘খেলাটি ফুটবলের মতো নয় যেখানে ৯২ ক্লাব রয়েছে। ক্রিকেটে মাত্র ১৮টি ক্লাব আছে। একটি থেকে উপেক্ষিত হলেও আরও ১৭টি রয়েছে। এখানকার ক্ষেত্র অত্যন্ত সীমাবদ্ধ।’ পরবর্তীতে, সাউথ লন্ডনের ডালউইচ কলেজ স্কুলের প্রথম একাদশের কোচ হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন। তাঁর যোগ্য সাহচর্য্যে ক্রিস জর্ডান ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ পেয়েছেন।
