৬ জুন, ১৯৫৬ তারিখে সলসবারিতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক, রেফারি ও কোচ। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

দীর্ঘকায় গড়নের অধিকারী ও উচ্চ মানসম্পন্ন ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে বেশ সুনাম কুড়িয়েছিলেন। জিম্বাবুয়ের সহযোগী দেশ হিসেবে ক্রিকেটে নিজের সেরা দিনগুলোয় দূর্দান্ত খেলতেন। কিন্তু, এ সফলতাকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দিতে পারেননি।

১৯৭৫-৭৬ মৌসুম থেকে ১৯৯২-৯৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রেখেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে রোডেশিয়া ও ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যাপক রান পেয়েছেন। দীর্ঘ সংস্করণের খেলায় পিছনের পায়ে ভর রেখে দূর্দান্ত ব্যাটিং করে দলে ভূমিকা রেখেছেন। তুলনান্তে, ৫০ কিংবা ৬০ ওভারের খেলায় তেমন সফলতা পাননি। নিয়মিতভাবে স্ট্রোক মারতেন। শট মারতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। এছাড়াও, কাট ও পুলে বেশ পারদর্শী ছিলেন।

খেলার স্বল্পতার কারণে সীমিত পর্যায়ে রোডেশিয়ার পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিতে পেরেছিলেন। তাসত্ত্বেও, সীমিত সুযোগ নিয়েই নিজের সেরা খেলা উপহারে সচেষ্ট ছিলেন। ১৯৯১-৯২ মৌসুমে শেন ওয়ার্ন, পল রেইফেল ও স্টিভ ওয়াহ’র ন্যায় তারকাসমৃদ্ধ অস্ট্রেলিয়া ‘বি’ দলের বিপক্ষে ১০৯ বলে ১০৪ রানের উৎসাহব্যঞ্জক ইনিংস উপহার দেন। দুই মেয়াদে জিম্বাবুয়ে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালনের জন্যে মনোনীত করা হলেও তিনি এ দায়িত্ব পালনে অগ্রসর হননি।

১৯৮৩ থেকে ১৯৯২ সময়কালে জিম্বাবুয়ের পক্ষে তিনটিমাত্র টেস্ট ও ২০টি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে নিজ দেশে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ১৮ অক্টোবর, ১৯৯২ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে জন ট্রাইকোস ব্যতীত অন্য সকলের সাথে তাঁর একযোগে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ৩৯ ও ৪৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।

১৯৯২-৯৩ মৌসুমে নিজ দেশে মার্টিন ক্রো’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ৭ নভেম্বর, ১৯৯২ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে পূর্বতন সর্বোচ্চ ৪৬ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ৬০ ও ৫ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। সফরকারী দল ১৭৭ রানে জয় পেলে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়েছিল।

বেশ বয়স নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। ফলে, অধিক টেস্ট খেলার সুযোগ লাভ করতে পারেননি। এছাড়াও, পারিবারিক সান্নিধ্য লাভের বিষয়েও খেলার জগৎ থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। সবকিছু ছাঁপিয়ে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্ট খেলায় অংশ নিয়ে নিজেকে স্মরণীয় করে রেখেছেন।

এছাড়াও, অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। নিউ সাউথ ওয়েলসের অ্যালবারিতে অনুষ্ঠিত খেলায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের বিজয়ের ন্যায় সেরা অঘটনের নেপথ্যে অবস্থান করে নিজেকে স্মরণীয় করে রাখেন। গ্রুপ পর্বের খেলায় প্রতিপক্ষকে মাত্র ১২৫ রানে গুটিয়ে দিতে ভূমিকা রাখেন।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। শুরুতে কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। জিম্বাবুয়ে ‘এ’ দল ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে পরিচালনা করেন। ইংল্যান্ড সফরকে ঘিরে ২১ এপ্রিল, ২০০০ তারিখে জিম্বাবুয়ের কোচ হিসেবে ডেভিড হটনের স্থলাভিষিক্ত হন। প্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে জড়িয়ে পড়লে ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার পর দায়িত্ব ছেড়ে দেন। দল নির্বাচকমণ্ডলীর অসহযোগিতাকে দায়ী করেন। ২০০৪ সালে হিথ স্ট্রিকের বোর্ডের সাথে মতবিরোধের কারণে অবসর গ্রহণের বিষয়েও তাঁর ভূমিকা ছিল বলে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের অভিমত। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে ‘এ’ দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীতে, দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য হবার পর জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর প্রধান হন। এরপর, আম্পায়ার হিসেবে খেলা পরিচালনায় অগ্রসর হন। এছাড়াও, ২০০৯ সাল থেকে আইসিসি ম্যাচ রেফারিসহ আইসিসি রেফারিদের শীর্ষ তালিকায় যুক্ত রয়েছেন।

Similar Posts

  • | |

    জেরি আলেকজান্ডার

    ২ নভেম্বর, ১৯২৮ তারিখে জ্যামাইকার কিংস্টনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। অতি আগ্রাসী ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও সঠিকমানের উইকেট-রক্ষক ছিলেন। এছাড়াও, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের জনপ্রিয় অধিনায়ক ছিলেন। ১৯৫২ থেকে ১৯৬০-৬১ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান…

  • | |

    মুশতাক আহমেদ

    ২৮ জুন, ১৯৭০ তারিখে পাঞ্জাবের শাহিওয়াল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। পাকিস্তানের পক্ষে টেস্ট ও ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। বুদবুদপূর্ণ, গোলকার গড়নের লেগ-স্পিনার। গুগলিতে দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। আব্দুল কাদিরকে স্বীয় পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রেখেন। বোলিংয়ের ধরন অনেকাংশেই তাঁর…

  • | |

    সঞ্জয় মাঞ্জরেকর

    ১২ জুলাই, ১৯৬৫ তারিখে মহীশূরের মাঙ্গালোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাশাপাশি, উইকেট-রক্ষণের সাথেও নিজেকে জড়িয়েছিলেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। অসীম সময়ের জন্যে অপূর্ব ব্যাটিং কৌশল অবলম্বন করতেন। এমনকি রান সংগ্রহে স্থবিরতা গ্রহণকালেও তাঁর ব্যাটিং দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম…

  • | | |

    মাইক অ্যাথার্টন

    ২৩ মার্চ, ১৯৬৮ তারিখে ল্যাঙ্কাশায়ারের ফেইলসওয়ার্থ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার, সাংবাদিক ও লেখক। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৬ ফুট উচ্চতার অধিকারী মাইকেল অ্যাথারটন ‘কোকরোচ’, ‘এফইসি’, ‘অ্যাথার্স’ কিংবা ‘ড্রেড’ ডাকনামে পরিচিত ছিলেন। ম্যানচেস্টার গ্রামার স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। এরপর, কেমব্রিজের ডাউনিং…

  • | | | |

    মার্টিন ক্রো

    ২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৬২ তারিখে অকল্যান্ডের হেন্ডারসনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার ছিলেন। মাঝারিসারিতে ধ্রুপদীশৈলীর ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। নিউজিল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮০-এর দশকের শেষার্ধ্ব থেকে শুরু করে ১৯৯০-এর দশকের সূচনালগ্ন পর্যন্ত বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যাটসম্যান ছিলেন। এছাড়াও, ১৯৮০-এর দশকে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের বিরাট সাফল্যে…

  • | |

    অব্রে ফকনার

    ১৭ ডিসেম্বর, ১৮৮১ তারিখে কেপ প্রভিন্সের পোর্ট এলিজাবেথ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং উদ্বোধনের পাশাপাশি লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ট্রান্সভালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলেছেন। ১৯০২-০৩ মৌসুম থেকে…