২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৯ তারিখে সলসবারিতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
‘বান্ডু’ ডাকনামে পরিচিতি পান। দীর্ঘদেহী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন। ক্রমাগত আঘাত ও তামাক চাষে জড়িত থাকায় খেলোয়াড়ী জীবন উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জনপ্রিয় ছিলেন ও বিনোদনধর্মী ব্যাটসম্যান হিসেবে সুনাম কুড়ান। অসাধারণ ফিল্ডিংয়ের পাশাপাশি মাঝে-মধ্যে মিডিয়াম-পেস বোলিং করলেও যথেষ্ট কার্যকরী ভূমিকা রাখতেন। ১৯৮৪-৮৫ মৌসুম থেকে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে ম্যাশোনাল্যান্ড ও ম্যাশোনাল্যান্ড কান্ট্রি ডিস্ট্রিক্টসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
১৯৮৭ থেকে ১৯৯৭ সময়কালে জিম্বাবুয়ের পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্ট ও ৩৯টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে জিম্বাবুয়ের একদিনের আন্তর্জাতিক দলের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। ১৯৮৭, ১৯৯২ ও ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। ৩৭ বছর বয়সে টেস্ট ক্রিকেট খেলার সুযোগ পান। বেশ ধীরলয়ে খেলার কারণেই এমনটি ঘটেছে।
অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। নিউ সাউথ ওয়েলসের অ্যালবারিতে অনুষ্ঠিত নিম্নমূখী রানের খেলায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের বিজয়ের ন্যায় সেরা অঘটনের নেপথ্যে অবস্থান করে নিজেকে স্মরণীয় করে রাখেন। গ্রুপ পর্বের ঐ খেলায় দল মাত্র ১৩৪ রানে গুটিয়ে গেলেও ৯ রানের নাটকীয় জয় তুলে নেয়।
১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে মাইক অ্যাথার্টনের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম টেস্টে অত্যন্ত ধৈর্য্যশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে অর্ধ-শতক হাঁকিয়েছিলেন। ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে বুলাওয়েতে সিরিজের প্রথম টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল। ১৫ ও ৫০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন।
দ্বিতীয় টেস্টেও দলে থাকেন। ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে হারারেতে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ারের ৭৩ রানের বদান্যতায় সিরিজটি ড্র হয়। ঐ টেস্টের প্রথম ইনিংসে তিনি কেবলমাত্র ৪ রান তুলতে পেরেছিলেন। পরবর্তীতে এটিই তাঁর সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ ছিল। ঐ মৌসুম শেষে অবসর গ্রহণের পূর্বে আরও সাতটি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন।
জিম্বাবুয়ীয় সরকারের বিতর্কিত ভূমি পুণঃগঠন প্রকল্পের কারণে তাঁর পারিবারিক খামার বাজেয়াপ্ত হয়। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এরপর, নামিবিয়ার প্রধান কোচের দায়িত্ব ছিলেন। কয়েক বছর পর জিম্বাবুয়েতে ফিরে আসেন। এরপর, আরও একবার সাময়িকভাবে জোহানেসবার্গে কোচিংয়ের কারণে অবস্থান করেন। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট কর্তৃপক্ষের সাথে আরও কয়েকজন সাবেক খেলোয়াড়কে সাথে নিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামো সংস্কারে এগিয়ে আসেন।
এপ্রিল, ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে কোচিং ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালনসহ ঘরোয়া কোচিং অবকাঠামো পর্যবেক্ষণে দায়িত্বে ছিলেন। ঐ বছরের সেপ্টেম্বরে মিড ওয়েস্ট রাইনোসের প্রধান কোচ হিসেবে মনোনীত হন। কিন্তু, শীতকালে যুক্তরাজ্যে চলে যান ও ইস্টবোর্ন কলেজ প্রথম একাদশ পরিচালনায় যুক্ত হন। কোচ হিসেবে অ্যালেন বুচারের জিম্বাবুয়ে জাতীয় ক্রিকেট দলের সময়সীমা শেষ হলে বেশ কয়েকজনের সাথে তাঁকেও এ পদের সম্ভাব্য উত্তরসূরী হিসেবে বিবেচনায় আনা হয়। মে, ২০১৩ সালে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে মনোনীত হন। দলকে নিয়ে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। নিজ দেশে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ চলাকালীন একই সময়ে ইস্টবোর্ন কলেজ দলকে পরিচালনা করার ফলে স্টিভ ম্যাঙ্গোঙ্গো প্রধান কোচ হিসেবে আবির্ভূত হন। যুক্তরাজ্য থেকে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে জুলাই, ২০১৩ সালে ভারতের বিপক্ষে পাঁচ খেলা নিয়ে গড়া সিরিজে কোচ হিসেবে অংশ নেন। বারো মাস পর জাতীয় কোচিং পরিচালকের নতুন দায়িত্বে চলে যান ও প্রধান কোচের দায়িত্ব স্টিভ ম্যাঙ্গোঙ্গোর কাছে হস্তান্তর করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। তাঁর সন্তান ম্যালকম ওয়ালার জিম্বাবুয়ের পক্ষে খেলেছেন। কোচের দায়িত্ব পালনকালে মে, ২০১৩ সালে ম্যালকম ওয়ালারসহ দলকে নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসেন।
