১৬ এপ্রিল, ১৯৫৮ তারিখে মহীশুরের পুত্তুর এলাকায় জন্মগ্রহকারী ক্রিকেটার, কোচ, প্রশাসক ও আম্পায়ার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৮০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
১৯৭৯-৮০ মৌসুম থেকে ১৯৯২-৯৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে কর্ণাটকের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তেরো বছরব্যাপী প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে ২৩-এর কম গড়ে ৩৭৪ উইকেট পেয়েছেন। কর্ণাটক দলের প্রধান বোলিং চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। দলটির পক্ষে বেশ কয়েকটি রেকর্ডের সাথে স্বীয় নামকে যুক্ত করে রেখেছেন। রঞ্জী ট্রফিতে ৩৪৩ উইকেট পেয়েছিলেন। দলের প্রথম হ্যাট্রিক লাভসহ ইনিংসে আট-উইকেট ও খেলায় তেরো উইকেট পেয়েছেন।
দলের উজ্জ্বীবনী শক্তিতে আবির্ভুত হতে ও পরিস্থিতি বুঝে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যেতেন। দীর্ঘক্ষণ ধরে বোলিং করতে পারতেন। ১৯৮১-৮২ মৌসুমে রঞ্জী ট্রফির চূড়ান্ত খেলায় দিল্লির বিপক্ষে ৯৮ ওভারে ১/১৬০ পান। ঐ সময়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের এক ইনিংসে এটি তৃতীয় সর্বাধিক বোলিংয়ের মর্যাদা পায়। এছাড়াও, ভারতীয়দের মধ্যে সর্বাধিক ছিল। ঐ খেলার পূর্বে সেমি-ফাইনালে তাঁর বামহাতি স্পিন বল মোকাবেলায় সুনীল গাভাস্কার বামহাতে ব্যাটিং করেছিলেন। সুনীল গাভাস্কার অপরাজিত থাকলেও বোম্বে দলের বিপক্ষে খেলায় তিনি হ্যাট্রিকসহ ৮/১২৩ ও ৫/৭৭ পান। ঐ মৌসুমে ২১ গড়ে ৪১ উইকেট দখল করে রঞ্জী ট্রফিতে শীর্ষে অবস্থান করেন। ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমেও ১৭ গড়ে ৪২ উইকেট নিয়ে মার্গাশ্যাম বেঙ্কটরমনের সাথে যৌথভাবে শীর্ষে ছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে একগুচ্ছ দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ এনে দেয়।
১৯৮৩ সালে ভারতের পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। উভয় টেস্টই পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছেন। ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে নিজ দেশে জহির আব্বাসের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলার উদ্দেশ্যে দিলীপ দোশী’র পরিবর্তে তাঁকে দলে রাখা হয়। ৫ অক্টোবর, ১৯৮৩ তারিখে নাগপুরে অনুষ্ঠিত সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ৬৫ রান খরচ করে জাভেদ মিয়াঁদাদকে লেগ বিফোরে বিদেয় করেন। পরদিন মুদাসসর নজরকে স্ট্যাম্পিংয়ে বিদেয় করে উইকেট পান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও ০-০ ব্যবধানে অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়।
এরপর, একই মৌসুমে নিজ দেশে ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ২১ অক্টোবর, ১৯৮৩ তারিখে কানপুরে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। ২/৮৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ০ ও ৬ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। ম্যালকম মার্শালের অসামান্য অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কারণে খেলায় তাঁর দল ইনিংস ও ৮৩ রানে পরাজিত হলে ছয়-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
রবি শাস্ত্রী ও মনিন্দার সিংয়ের টেস্ট অভিষেকের পর দল থেকে বের করে দেয়া হলেও সংক্ষিপ্তই টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনে তাঁকে দিলীপ দোশী’র যোগ্য উত্তরাধিকারী হিসেবে গণ্য করা হতো। কর্ণাটকের দুই প্রজন্মের বোলিং কিংবদন্তী ভাগবত চন্দ্রশেখর ও অনিল কুম্বলে’র সাথে সংযুক্ত ছিলেন।
খুব সম্ভবতঃ উপযোগী পিচেই তাঁর বোলিং অধিকতর কার্যকর ছিল। সহায়ক পরিবেশে বলকে বেশ বাঁক খাওয়াতে সক্ষমতা প্রদর্শন করতেন। প্রতিপক্ষীয় ব্যাটসম্যানদের যথেষ্ট সমীহের পাত্রে পরিণত হতেন। সর্বোপরি, যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ রেখে সঠিক নিশানা বরাবর বল ফেলতেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। কর্ণাটক ক্রিকেটে কোচ, প্রশাসক ও আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেন। ১২ জুলাই, ২০১৬ তারিখে গোয়া দলের কোচ হিসেবে দুই বছরের জন্যে নিযুক্তি পান।
