২১ আগস্ট, ১৯১৪ তারিখে কেন্টের সিডকাপ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ বোলিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। ডানহাতে মিডিয়াম কিংবা লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
১৯৩১ সাল থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত মাইনর কাউন্টিজ চ্যাম্পিয়নশীপে কেন্ট দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে খেলেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেন। রয়্যাল আর্টিলারিতে লেফটেন্যান্ট পদবীধারী ছিলেন।
১৯৩২ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৩৬ সালে কেন্টের ক্যাপ লাভ করেন। ১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে কেন্টের প্রথম পেশাদার অধিনায়ক হিসেবে তিন বছরের জন্যে মনোনীত হয়েছিলেন। সব মিলিয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে থেকে ২০৫৬ উইকেট দখল করেছিলেন। তন্মধ্যে, কাউন্টির পক্ষে ১৭০৯ উইকেট নিয়ে কেন্টের সর্বকালের বোলারদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে নিজেকে নিয়ে আসেন। ১৯৫৬ সালে ক্যান্টারবারি সপ্তাহে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ২০০০তম উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন।
১৯৩৮ থেকে ১৯৫১ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ৩৪ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৩৮ সালে নিজ দেশে ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১০ জুন, ১৯৩৮ তারিখে নটিংহামে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। রেগ সিনফিল্ড ও বিল এডরিচের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ৪/১৫৩ ও ১/৮৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে ওয়ালি হ্যামন্ডের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ২১ মার্চ, ১৯৪৭ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলায় ০/৬১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।
১৯৪৭ সালে নিজ দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হন। জুন, ১৯৪৭ সালে লর্ডস টেস্টে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলায় তিনি তাঁর একমাত্র দশ উইকেটের সন্ধান পান। ১৭৫ রান খরচায় তিনি উইকেটগুলো পেয়েছিলেন। ডব্লিউ জে এডরিচ ও ডি সি এস কম্পটনের তৃতীয় উইকেট জুটিতে রেকর্ডসংখ্যক ৩৭০ রানের ইনিংস খেলার পর ২২ বলের ব্যবধানে রোয়ান, টাকেট ও মানকে লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে বিদেয় করেন। প্রথম ইনিংসে ৫/৯৫ লাভের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও আবারও সফল হন। নিখুঁত নিশানা বরাবর বোলিংয়ে সর্বদাই নিজেকে বিপজ্জ্বনক বোলারে রূপান্তরিত করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫/৮০ নিয়ে দলকে ১০ উইকেটে জয় এনে দিতে বিরাট ভূমিকা পালনে অগ্রসর হন।
১৯৫০-৫১ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে ফ্রেডি ব্রাউনের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ১৭ মার্চ, ১৯৫১ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৩৩ রান অতিক্রম করেন। একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ৪৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়া, বল হাতে ২/৯৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
একই সফরের ২৪ মার্চ, ১৯৫১ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৫/৪৮ ও ০/৩২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ৯* রান সংগ্রহ করেছিলেন। সফরকারীরা ৫ উইকেটে জয় পেলে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
১৯৫০ সালের আর্থিক সুবিধা গ্রহণের খেলার জন্যে মনোনীত হন। £৫,২৫৪ পাউন্ড-স্টার্লিং লাভ করেন। ১৯৫৭ সালে আবারও আর্থিক সুবিধা গ্রহণের খেলার জন্যে মনোনীত হন। এ পর্যায়ে £৩,৭১৬ পাউন্ড-স্টার্লিং পেয়েছিলেন। ১৯৪০ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন।
১৩ নভেম্বর, ১৯৯৮ তারিখে কেন্টের ক্যান্টারবারি এলাকায় ৮৪ বছর ৮৪ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
