২১ জানুয়ারি, ১৮৮৮ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের ডার্লিংহার্স্ট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে দক্ষতার স্বাক্ষর প্রদর্শন করেছেন। ১৯২০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
‘হর্সশো’ কিংবা ‘লাকি’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। অ্যালবিওন স্ট্রিট সুপারিওর পাবলিক স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। ১৯০৯-১০ মৌসুম থেকে ১৯২৫-২৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণের পূর্বে ১৯১৩-১৪ মৌসুমে আর্থার সিমের অধিনায়কত্বে অস্ট্রেলীয় একাদশের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড সফর করেছিলেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সৈনিক হিসেবে যোগদান করেন। এ সময়ে অবসর সময়কালে জুয়া খেলার অভ্যাস গড়ে উঠে। যুদ্ধের পর অস্ট্রেলিয়ান ইম্পেরিয়াল ফোর্সেস ক্রিকেট দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। শেষ পর্যায়ে দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসার পর টেস্ট দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত হন।
১৯২০ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বমোট ১৯ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯২০-২১ মৌসুমে নিজ দেশে জনি ডগলাসের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১৭ ডিসেম্বর, ১৯২০ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। আর্থার মেইলি, নিপ পেলিও, জ্যাক রাইডার, জ্যাক গ্রিগরি, জনি টেলর ও বার্ট ওল্ডফিল্ডের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৪ রানের ইনিংস খেলেন। এরফলে, পঞ্চম অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট অভিষেকে শতক হাঁকানোর গৌরব অর্জন করেন। এছাড়াও, প্রথম ইনিংসে ৭০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৩৭৭ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়ে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
১৯২১-২২ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে অজি দলকে নেতৃত্ব দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। এ সফরে নিয়মিত অধিনায়ক ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং অসুস্থ হলে তিনি অস্ট্রেলিয়া দলকে নেতৃত্ব দেন। ৫ নভেম্বর, ১৯২১ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ৩১ ও ৪৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। এছাড়াও, জোহানেসবার্গ টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২০৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
১৯২৪ সালের অ্যাশেজ সিরিজ বিজয়ে নেতৃত্ব দেন। ১৯২৪-২৫ মৌসুমে নিজ দেশে আর্থার জিলিগানের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১৯ ডিসেম্বর, ১৯২৪ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ১১৪ ও ৬০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ১৯৩ রানে জয় পেলে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
১৯২৬ সালে অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ইংল্যান্ড সফরে যান। ১৪ আগস্ট, ১৯২৬ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৬১ ও ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ২৮৯ রানে পরাজিত হলে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
পঞ্চম টেস্টে অস্ট্রেলিয়া দল পরাজিত হলে সন্দেহ ঘণীভূত হয়। তবে, সাবেক খেলোয়াড় ও ক্রিকেট প্রশাসকমণ্ডলী পাতানো খেলা হিসেবে ধারনা করলেও কোন প্রমাণ পাননি। বিতর্কের কবলে পড়ে টেস্ট ক্রিকেট থেকে চলে আসতে বাধ্য হন। টেস্টগুলো থেকে চার শতক সহযোগে ৪৫.০৬ গড়ে ১৩৫২ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে টেস্ট ক্রিকেটে অংশ নিলেও কোন শূন্য রান সংগ্রহ করেননি। তবে, তিনবার ১ রান তুলে বিদেয় নিয়েছিলেন। সবগুলোই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছিল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্বল্পকালীন অংশগ্রহণ করলেও নিউ সাউথ ওয়েলসে বেশ পরিচিত মুখ ছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলো থেকে ৪০.০১ গড়ে ৯৯২৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ক্রিকেটের বাইরে রাগবি খেলায় পারদর্শী ছিলেন। ইস্টসের সদস্যরূপে ১৯১১ সালের চূড়ান্ত খেলায় গ্লেবের বিপক্ষে খেলেন। এরপর তিনি ক্রিকেট খেলায় চলে যান। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ঘোড়দৌড়ে জুয়াড়ীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। বাজীকর ও কমিশন এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন।
২৮ মে, ১৯৫৯ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের লিটল বে এলাকায় ৭১ বছর ১২৭ দিন বয়সে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তাঁর দেহাবসান ঘটে। এ পর্যায়ে তিনি অর্থহীন ও বন্ধু-বান্ধবহীন ছিলেন।
