২১ জুলাই, ১৯৪৫ তারিখে নাটালের মর্নিংসাইড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, প্রশাসক ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৭০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
১৯৬৪-৬৫ মৌসুম থেকে ১৯৮২-৮৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রেখেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নাটাল ও ট্রান্সভাল, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়া এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্লুচেস্টারশায়ার ও হ্যাম্পশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে নাটালের পক্ষে প্রথমবারের মতো প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেন। আকর্ষণীয় ব্যাটিংয়ে দর্শকদের মনোরঞ্জনে অগ্রসর হতেন।
ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে গর্ডন গ্রীনিজকে সাথে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে বেশ সাড়া জাগান। ১৯৭০ সালে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরূপে ডেনিস লিলিসমৃদ্ধ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ প্রতিহত করে ওয়াকায় একদিনে ৩২৫ রান তুলেছিলেন। ১৯৭১-৭২ মৌসুম থেকে পরবর্তী পাঁচ মৌসুমের চারটিতে সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ঐ মৌসুমগুলোয় বারোটির অধিক খেলা আয়োজন করা হতো না।
১৯৭০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিতাড়ণের পূর্বে ঐ টেস্টগুলো খেলেন। ১৯৬৯-৭০ মৌসুমে নিজ দেশে বিল লরি’র নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ২২ জানুয়ারি, ১৯৭০ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। লি আরভিন, ডেনিস গ্যামসি ও গ্রাহাম শ্যাভলিয়ারের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ২৯ ও ৩২ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে অ্যালেন কনোলি’র শিকারে পরিণত হন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দীকরণে অগ্রসর হন। স্বাগতিকরা ১৭০ রানে জয় পেলে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭০ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। কয়েকবার ব্যক্তিগত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৩২ রান অতিক্রম করেন। এ পর্যায়ে টেস্টে নিজস্ব প্রথম শতক হাঁকান। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১৪০ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, ০/৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ইনিংস ও ১২৯ রানে পরাজয়বরণ করলে সফরকারীরা ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।
একই সফরের ৫ মার্চ, ১৯৭০ তারিখে জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৮ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৮১ ও ১২৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। স্বাগতিকরা ৩২৩ রানে জয় পেলে সফরকারীরা ৪-০ ব্যবধানে ধবল ধোলাইয়ের শিকারে পরিণত হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
টেস্টগুলো থেকে ৭২ গড়ে রান তুলেন। দুইটি শতক ও দুইটি অর্ধ-শতকের সন্ধান পান। ক্যারি প্যাকারের ব্যবস্থাপনায় অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯৭৭-৭৮ ও ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের উপস্থিতি জানান দেন। বিশ্ব একাদশের পক্ষে খেলেন। পাঁচ খেলা থেকে ৫৫৪ রান তুলেন। অস্ট্রেলীয় দলের বিপক্ষে ২০৭ রানের ইনিংস খেলেন।
ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডে টেস্ট ও একাডেমি দলের ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। পাশাপাশি, কুইন্সল্যান্ড ক্রিকেটে সিইও হিসেবে নয় বছর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার কোচ হিসেবে দলকে শেফিল্ড শীল্ডের চূড়ান্ত খেলায় নিয়ে যান। ২০০৪ সালে আইসিসি’র প্রবর্তিত ভোটের মাধ্যমে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের পুরস্কার প্রদানের সাথে জড়িত থাকেন। ১৯৬৯ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ২০০৯ সালে আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত ৫৫জন খেলোয়াড়ের অন্যতম ছিলেন।
