১৮ মার্চ, ১৮৯৮ তারিখে ওয়েলসের বনভিলস্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হতেন। ১৯৩০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
উইনচেস্টারে অধ্যয়ন করেছেন। চিপস্টো এলাকায় ক্রীড়াপ্রেমী পরিবারের সন্তান ছিলেন। যুবক অবস্থায় ক্ষীপ্রগতিসম্পন্ন ফাস্ট বোলার ছিলেন। শুরুতে মাইনর কাউন্টি ক্রিকেটে মন্মাউথশায়ারের পক্ষে খেলেছেন। ১৯২১ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগন দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, ওয়েলসের পক্ষে খেলেছেন। ১৯২১ সালে গ্ল্যামারগনের পক্ষে প্রথমবারের মতো খেলেন। তবে, ক্রমাগত আঘাতের কবলে পড়েন। ১৯২৪ সালে লেগ-ব্রেক ও অফ-স্পিন বোলিং পরীক্ষামূলকভাবে খেলতে থাকেন। এছাড়াও, গ্ল্যামারগনের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর প্রাণান্তঃকর প্রচেষ্টার ফলে চ্যাম্পিয়নশীপের তলানী থেকে দল ত্রয়োদশ অবস্থানে পৌঁছে।
১৯৩০-এর দশকে তাঁর আন্তরিক সহযোগিতার ফলেই গ্ল্যামারগন কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব মহামন্দার কবল থেকে রক্ষা পায়। ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৮ সময়কালে তিনি ক্লাবের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন ও অন্তরঙ্গ বন্ধু মরিস টার্নবুলকে সাথে নিয়ে শীত মৌসুমের পর শীত মৌসুম ক্লাবের তহবিল বৃদ্ধিতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে থাকেন। কার্ডিফভিত্তিক ব্যবসায়ী হিসেবে চমৎকারভাবে স্বীয় পরিচিতি বহির্বিশ্বে তুলে ধরেন ও বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে কাউন্টি দলটিকে টিকিয়ে রাখতে অসম্ভব ভূমিকা রাখেন।
খেলার মাঠে দলের বোলিং আক্রমণের নেতৃত্বে ছিলেন। ১৯৩৭ সালে ১৭৬ উইকেট দখল করেছিলেন। ওয়েলসের কাউন্টি দলের সদস্যরূপে এক মৌসুমে সর্বাধিকসংখ্যক উইকেট লাভের রেকর্ড গড়েন। এরফলে, ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্ট খেলার জন্যে আমন্ত্রণ বার্তা পান। এছাড়াও, নিচেরসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে আক্রমণাত্মক ধাঁচ অবলম্বনে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। বেশ কিছু দূর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন। ১৯২৭ সালে সফররত নিউজিল্যান্ডীয় একাদশের বিপক্ষে অপরাজিত শতক হাঁকিয়েছিলেন। এছাড়াও, ১৯২৯ সালে সোয়ানসীতে ওরচেস্টারের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় নিজস্ব প্রথম শতরানের ইনিংস খেলেন। তিন অঙ্কের কোটা স্পর্শে তিনি মাত্র ৯৫ মিনিট ব্যয় করেন। তবে, সবকিছু ছাঁপিয়ে দশ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে স্মরণীয় করে রেখেছিলেন। জো হিলের সাথে নবম উইকেট জুটিতে ২০৩ রান তুলে ক্লাব রেকর্ড গড়েন।
১৯৩৫ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে একটিমাত্র টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। ঐ বছর নিজ দেশে হার্ভি ওয়েডের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ১৭ আগস্ট, ১৯৩৫ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। হপার রিডের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। তবে, সমীহের পাত্রে পরিণত হলেও কোন উইকেট লাভে ব্যর্থতার পরিচয় দেন। খেলায় তিনি বল হাতে নিয়ে ০/৩০ ও ০/৪৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করানোসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নামার সুযোগ পাননি। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
এরপর আর তাঁকে উচ্চ স্তরের ক্রিকেট খেলার জন্যে দলে রাখা হয়নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হলেও গ্ল্যামারগনের পক্ষে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করতে থাকেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৮ সময়কালে ইংল্যান্ডের টেস্ট দল নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
১১ আগস্ট, ১৯৭৩ তারিখে ওয়েলসের সেন্ট হিলারি এলাকায় ৭৫ বছর ১৪৬ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
