২৬ জানুয়ারি, ১৯৬৮ তারিখে অকল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৯০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
দীর্ঘকায় গড়নের অধিকারী ও খোলা বক্ষে বোলিং কর্মে অগ্রসর হন। ডিসেম্বর, ১৯৮৭ সালে প্রথমবারের মতো প্রতিনিধিত্বমূলক খেলায় সকলের দৃষ্টি কাড়েন। অকল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-২০ দলের সদস্যরূপে নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টের অনূর্ধ্ব-২০ দলের বিপক্ষে ছয়-উইকেট নিয়ে দলকে জয় এনে দেন। এরপর, নিজস্ব তৃতীয় খেলায় ১৩ উইকেট দখল করেন। তন্মধ্যে, প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেট পেয়েছিলেন। এরফলে, বয়সভিত্তিক দল থেকে অকল্যান্ডের দ্বিতীয় একাদশে খেলার সুযোগ দেয়া হয়। ১৯৮৮ সালে ক্রিস কেয়ার্নস ও লি জার্মনের সাথে নিউজিল্যান্ড ইয়ং ক্রিকেটার্স দলে একত্রে খেলেন।
১৯৮৯-৯০ মৌসুম থেকে ১৯৯৫-৯৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে অকল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, নেদারল্যান্ডসের পক্ষে খেলেছেন। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে অকল্যান্ডের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ও লিস্ট-এ ক্রিকেটে প্রথম খেলেন। প্রথম ছয়টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় থেকে ২৪.৫৬ গড়ে ২৩ উইকেট দখল করেন। এরফলে, তাঁকে নিউজিল্যান্ড দলে খেলার সুযোগ দেয়া হয়।
১৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ১৪ টেস্ট ও ৬৪টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ২৩ মে, ১৯৯০ তারিখে লিডসের হেডিংলিতে অনুণ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। ৫৫-ওভারের খেলায় ২/৪৫ লাভ করেন। গ্রাহাম গুচ ও জ্যাক রাসেল তাঁর শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। ঐ খেলায় তাঁর দল ৪ উইকেট জয় পেয়েছিল। পরের ওডিআইয়ে একটিমাত্র উইকেটের সন্ধান পান ও স্বাগতিকরা জয় পায়। কাউন্টি দলগুলোর বিপক্ষে খেললেও কোন টেস্টে তাঁকে দলে রাখা হয়নি।
১৯৯০-৯১ মৌসুমে মার্টিন ক্রো’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সাথে পাকিস্তান সফরে যান। ১০ অক্টোবর, ১৯৯০ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ডেভিড হোয়াইট ও গ্র্যান্ট ব্র্যাডবার্নের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। সেলিম মালিকের একমাত্র উইকেট পান ও ১/৬৮ লাভ করেন। এছাড়াও, ০ ও ২০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। শোয়েব মোহাম্মদের অসাধারণ দ্বি-শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ৪৩ রানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
লাহোরে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে এক উইকেট পেলেও অধিক রান খরচ করে ফেলেন। ফয়সালাবাদে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে ১৬ ওভারে ৭/৫২ নিয়ে নিজের সেরা বোলিং করেন। স্বাগতিক দল বিনা উইকেটে ৩৫ থেকে ১০২ রানে গুটিয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪/১০ পান। তবে, শোয়েব মোহাম্মদের শতকের কল্যাণে স্বাগতিক দল রুখে দাঁড়ায়। খেলায় তিনি এগারো উইকেট পেলেও তাঁর বিরুদ্ধে বলে আঁচড় লাগানোর অভিযোগ উঠে। ঐ খেলায় তাঁর দল ৬৫ রানে পরাজিত হয়।
১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে কেন রাদারফোর্ডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৯৪ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০/২৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ০ ও ৬* রান সংগ্রহ করেন। ফ্যানি ডি ভিলিয়ার্সের চমৎকার অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যের কল্যাণে সফরকারীরা ৮ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
একই সফরের ২ জানুয়ারি, ১৯৯৫ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ২৪ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ৩০ ও ০* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, ১/৬৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, ডেভ রিচার্ডসনের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৭ উইকেটে পরাজিত হলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।
একই মৌসুমে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ১৮ মার্চ, ১৯৯৫ তারিখে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৩/৫১ ও ০/৫৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। চামিণ্ডা ভাসের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। একই সফরের ১ এপ্রিল, ১৯৯৫ তারিখে অকল্যান্ডে সর্বশেষ ওডিআইয়ে অংশ নেন।
টেস্টের তুলনায় ওডিআইয়েই বেশী প্রভাব ফেলেছিলেন। ব্যাটসম্যানের উদ্দেশ্যে ভীতিদায়ক বোলিং করতে পারতেন না; তবে, নিখুঁততার দিকেই অধিক নজর দিতেন। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে অকল্যান্ড কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধে গ্রহণের খেলার জন্যে মনোনীত হন। বলে নিয়ন্ত্রণ ও বৈচিত্র্যতা আনয়ণে ৫০-ওভারের ক্রিকেটে সফলতা পেয়েছেন।
নীচেরসারির কার্যকর ব্যাটসম্যান ছিলেন না। তাসত্ত্বেও, ওডিআইয়ে ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে অনবদ্য রেকর্ড গড়েন। ১৯৯৫ সালে ঘরোয়া আসরের কয়েকটি খেলায় অংশ নেন।
এক পর্যায়ে নিউজিল্যান্ড ছেড়ে নেদারল্যান্ডসে চলে আসেন। সেখানে ক্লাব ক্রিকেট খেলেন। জাতীয় দলের খেলোয়াড় ও কোচের যৌথ দায়িত্ব পালনে অগ্রসর হন। নেদারল্যান্ডসের সদস্যরূপে সারের বিপক্ষে একটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। নিউজিল্যান্ডীয় ঘরোয়া ক্রিকেটে ১৯৯৮ সালে সর্বশেষ খেললেও ২০০১ সাল পর্যন্ত নেদারল্যান্ডস দলের সাথে যুক্ত ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। ওলন্দাজ রমণী জানাইনের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। ‘সেভ দ্য লাস্ট বল ফর মি’ শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন।
