| |

ক্রিস ওল্ড

২২ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ তারিখে ইয়র্কশায়ারের মিডলসবোরা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

দ্রুত গতিসম্পন্ন ও নিখুঁতমানের সিমার ছিলেন। কিছুটা দেরীতে আউট-সুইঙ্গারে পারদর্শী ছিলেন। বব উইলিস ও ইয়ান বোথামের পর ইংল্যান্ডের তৃতীয় পেসার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তবে, খেলোয়াড়ী জীবনের অধিকাংশ সময়ই তাঁকে আঘাতের সাথে মিত্রতার বন্ধন করে অগ্রসর হতে হয়েছিল। কিন্তু, তাঁদের ন্যায় সম্ভাবনা ও সমীহ জাগানো বর্ণাঢ্যময় খেলোয়াড়ী জীবন পাড় করতে পারেননি।

‘চিলি’ ডাকনামে ভূষিত ক্রিস ওল্ড ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী। অ্যাকলাম হল সেকেন্ডারি গ্রামার স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। ইংল্যান্ড রাগবি ইউনিয়নের ফ্লাই-হাফ অবস্থানে খেলা অ্যালান সম্পর্কে তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ওয়ারউইকশায়ার ও ইয়র্কশায়ার এবং দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নর্দার্ন ট্রান্সভালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, নর্দাম্বারল্যান্ডের পক্ষে খেলেছেন। ১৯৬৬ থেকে ১৯৮৬ সময়কালে ১৯ বছর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবন চলমান রেখেছেন। ১৭ বছর বয়সে ১৯৬৬ সালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতে শুরু করেন।

১৯৭৩ থেকে ১৯৮১ সময়কালে ৮ বছর ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ৪৬ টেস্ট ও ৩২টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। পায়ে ও পিঠে আঘাত নিয়েও টেস্টগুলো থেকে ২৮ গড়ে ১৪৩ উইকেট দখল করেছিলেন। ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ইংল্যান্ড দলের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। এক পর্যায়ে দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। জিওফ্রে বয়কটের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হন।

১৯৭২-৭৩ মৌসুমে টনি লুইসের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সাথে ভারত গমন করেন। ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৭২ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারত দলের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ২/৭২ ও ৪/৪৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৩৩* ও ১৭* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ২৮ রানে জয় পেয়ে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সমতায় চলে আসে।

১৯৭৩ সালে নিজ দেশে বেভান কংডনের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ৫ জুলাই, ১৯৭৩ তারিখে লিডসে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৩৩ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ৩৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ৪/৭১ ও ২/৪১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলায় সফরকারী ইনিংস ও ১ রানে পরাজিত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে মাইক ডেনিসের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৫ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ৯ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/১৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। সফরকারীরা ইনিংস ও ৮৩ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৭৭ সালে এজবাস্টনে সর্বকালের তৃতীয় দ্রুততম শতক হাঁকানোর সাথে নিজেকে জড়ান। ৩৭ মিনিটে ৭২ বল মোকাবেলায় তিন অঙ্কের কোটা স্পর্শ করেন। তন্মধ্যে, শেষ অর্ধ-শতক হাঁকাতে মাত্র নয় মিনিট ব্যয় করেছিলেন।

১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে জিওফ বয়কটের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৮ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে আরও কলিঞ্জকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ৫/২১। খেলায় তিনি ৬/৫৪ ও ১/৩২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ১০ ও ৯ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে আরজে হ্যাডলি’র শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। ঐ টেস্টে ইংল্যান্ড দল প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাভূত করেছিল। ৭২ রানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সফরকারীরা পিছিয়ে পড়ে।

১৯৮১ সালে নিজ দেশে কিম হিউজের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। হেডিংলি টেস্টে অত্যাশ্চর্য্য ভূমিকা রাখেন। দলের সংগ্রহ ২৫২/৮ থাকাকালে মাঠে নামেন। এ পর্যায়ে ইংল্যান্ড দল ২৫ রানে এগিয়েছিল। এক ঘণ্টারও কম সময় নিয়ে ইয়ান বোথামের সাথে ৬৭ রান তুলেন।

১৯৮১ সালে নিজ দেশে কিম হিউজের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। একই সফরের ৩০ জুলাই, ১৯৮১ তারিখে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৩/৪৪ ও ১/১৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ১১* ও ২৩ রান সংগ্রহসহ একটি রান-আউটের সাথে নিজেকে জড়ান। তবে, ইয়ান বোথামের অসাধারণ অল-রাউন্ড কৃতিত্বে স্বাগতিকরা ২৯ রানে জয় পেলে ছয়-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

১৯৭৯ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। লেটিটিয়া নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। অবসর গ্রহণের পর কর্নওয়ালের প্রা স্যান্ডস এলাকায় সস্ত্রীক মৎস্য খামার, চিপের দোকান ও রেস্তোঁরা পরিচালনা করছেন।

Similar Posts

  • |

    ভিক স্টলমেয়ার

    ২৪ জানুয়ারি, ১৯১৬ তারিখে ত্রিনিদাদের সান্তা ক্রুজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৩০-এর দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে ত্রিনিদাদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৩৫-৩৬ মৌসুম থেকে ১৯৪৫-৪৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত…

  • | | |

    হিমু অধিকারী

    ৩১ জুলাই, ১৯১৯ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের পুনে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী এবং অত্যন্ত সম্মানীয় ভারতীয় ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। এছাড়াও, সেনাবাহিনীতে যুক্ত ছিলেন তিনি। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও লেগ-ব্রেক বোলিং করতেন। ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যতিক্রমধর্মী ফিল্ডার হিসেবে তিনি ফিল্ডিংয়ের গুরুত্বতা সম্পর্কে সতীর্থদেরকে অবহিত করে গেছেন। সামরিক শৃঙ্খলাকে উপজীব্য করে ঐ সময়ের ভারতীয় ক্রিকেটে…

  • |

    আতিফ রউফ

    ৩ মার্চ, ১৯৬৪ তারিখে পাঞ্জাবের লাহোর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। পাশাপাশি, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। ১৯৯০-এর দশকে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৮০-৮১ মৌসুম থেকে ২০০১-০২ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে পাকিস্তান এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ইসলামাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন…

  • | |

    ক্রিস প্রিঙ্গল

    ২৬ জানুয়ারি, ১৯৬৮ তারিখে অকল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৯০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। দীর্ঘকায় গড়নের অধিকারী ও খোলা বক্ষে বোলিং কর্মে অগ্রসর হন। ডিসেম্বর, ১৯৮৭ সালে প্রথমবারের মতো প্রতিনিধিত্বমূলক খেলায় সকলের দৃষ্টি কাড়েন। অকল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-২০ দলের…

  • |

    জনি ব্রিগস

    ৩ অক্টোবর, ১৮৬২ তারিখে নটিংহ্যামশায়ারের সাটন-ইন-অ্যাশফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ‘বয়’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। উইকেট লাভে সক্ষমতাসহ দীর্ঘক্ষণ ধরে একাধারে বোলিং করতে পারতেন। ছোটখাটো গড়নের অধিকারী হলেও পেসের বৈচিত্র্যতা আনয়ণের ফলে…

  • |

    ধ্রুব জুরেল

    ২১ জানুয়ারি, ২০০১ তারিখে উত্তরপ্রদেশের আগ্রা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। উইকেট-রক্ষণের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শী। ভারতের পক্ষে টেস্ট ও টি২০আই ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ২০২১-২২ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে উত্তরপ্রদেশ ও বহিঃভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, রাজস্থান রয়্যালস ও ভারত ‘এ’ অনূর্ধ্ব-১৯…