১ ডিসেম্বর, ১৯৮২ তারিখে ঢাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ২০০০-এর দশকে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
কৌশলগতভাবে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে সফল ছিলেন। তবে, প্রত্যাশা অনুযায়ী নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। বেশ কয়েকটি দূর্বল ইনিংস খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বাদ পড়েন। নিজেকে সংগঠিত করে ও অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে ক্রিজে অবস্থান করতেন। ২০০০-০১ মৌসুম থেকে ২০১১-১২ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে বরিশাল বিভাগ ও রাজশাহী বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
২০০২ থেকে ২০০৪ সময়কালে বাংলাদেশের পক্ষে সব মিলিয়ে ১৭ টেস্ট ও ২০টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ২০০২ সালে খালেদ মাসুদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দলের সাথে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। ১৯ বছর বয়সে ২১ জুলাই, ২০০২ তারিখে কলম্বোর পিএসএসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে আলমগীর কবির, এহসানুল হক ও তালহা জুবায়েরের সাথে তাঁর একযোগে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ইনিংস ও ১৯৬ রানের ব্যবধানে পরাজিত হয় তাঁর দল। একই সফরের ৭ আগস্ট, ২০০২ তারিখে একই মাঠে ওডিআইয়ে প্রথমবারের মতো অংশ নেন।
২০০৩ সালে দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ২৫ জুলাই, ২০০৩ তারিখে কেয়ার্নসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে উভয় ইনিংসেই অর্ধ-শতরানের ইনিংস (৭৬ ও ৫৫) হাঁকিয়েছিলেন। গ্লেন ম্যাকগ্রা, জেসন গিলেস্পি, ব্রেট লি ও স্টুয়ার্ট ম্যাকগিলের ন্যায় বোলারদের মোকাবেলা করে পুরো খেলায় পাঁচ ঘণ্টার অধিক সময় মাঠে অবস্থান করেন। তন্মধ্যে, প্রথম ইনিংসে ১৯৭ মিনিটে ১৩৬ বল মোকাবেলান্তে ৭৬ রান তুলে সাবেক অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান ডেভিড হুকসের একদিনেই অস্ট্রেলিয়া দল ফলাফল আনয়ণে সক্ষমতার মন্তব্যে ঠাণ্ডা জল ঢেলে দেন।
২০০৩ সালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজ খেলতে পাকিস্তান সফর করেন। তন্মধ্যে, সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্ট হিসেবে পরিচিতি পাওয়া খ্যাতনামা মুলতান টেস্টে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। ইনজামাম-উল-হকের অপরাজিত ১৬৮ রানের অসম্ভব দৃঢ়তায় বাংলাদেশ দল এক উইকেটে পরাজিত করলে প্রত্যেকেই সাজঘরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
অংশগ্রহণকৃত টেস্টগুলো থেকে মাত্র পাঁচটি অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলতে পেরেছিলেন। তন্মধ্যে, তিনটিই করেছেন অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে। এ ইনিংসগুলোর মাধ্যমে নিজের ব্যাটিং প্রতিভার কথা জানান দেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শুরুতে বেশ প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর রাখলেও পরবর্তীতে ব্যাটিং কৌশলে ত্রুটি ধরা পড়ে। দুই মৌসুমের মধ্যে ঢাকায় সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বামহাতি পেসার পেড্রো কলিন্সের কোপানলে পড়েন। ২০০৩-০৪ মৌসুমে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে তাঁর বলে অনাকাঙ্খিত বিদেয়ের সাথে নিজেকে জড়িত করেন। ঢাকা, গ্রোস আইলেট ও কিংস্টনে তিনবার প্রথম বলে বিদেয় হন। এরফলে, সুনীল গাভাস্কারের পর দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এ দূর্ভাগ্যজনক ও অমর্যাদাকর ঘটনার সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। এ সমস্যা মূলতঃ নতুন বল মোকাবেলায় বাহু উত্তোলনের কারণে হয়েছে।
২০০৪ সালে নিজ দেশে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ অংশ নেন। ১৯ অক্টোবর, ২০০৪ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত নিজস্ব শেষ টেস্টে ০ ও ১ রান তুলে বিদেয় নিলে উপস্থিত দর্শকদের বিদ্রুপাত্মক ধ্বনি শুনতে হয়। ইনিংস ও ৯৯ রানে সফরকারীরা জয় পায়।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে উপেক্ষিত হলে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ও ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে সরব ছিলেন। ২০১১ সাল পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের পক্ষে খেলেন। দীর্ঘ সময়ের খেলায় বরিশালের সদস্যরূপে সব মিলিয়ে কেবলমাত্র দুইটি শতক হাঁকিয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক খেলাগুলোয় ব্যাটিং কৌশলের ত্রুটি দূরীকরণে সচেষ্ট হওয়াসহ রান সংগ্রহের দিকে দৃষ্টি রাখতে পারলে আরও অধিক সময় সন্দেহাতীতভাবেই বাংলাদেশের পক্ষে খেলতে পারতেন।
