| |

টেরি অল্ডারম্যান

১২ জুন, ১৯৫৬ তারিখে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পার্থে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে টেস্ট ও ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন।

মিডিয়াম পেসার হিসেবে দৃশ্যতঃ ইংল্যান্ডের মাটিতে দূর্দমনীয় ছিলেন। সর্বদাই মৃদু হাসি নিয়ে বোলিংয়ে অগ্রসর হতেন। যতক্ষণ বোলিংয়ে অগ্রসর হতেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এ হাসি বজায় থাকতো। আউট-সুইঙ্গার ও অফ-কাটার সহযোগে ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। দীর্ঘ দূরত্ব ও গতি বজায় রাখতে সচেষ্ট হতেন। ইংরেজ পরিবেশে অজিদের সফলতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিলেন। ১৯৮১ ও ১৯৮৯ সালের ইংল্যান্ড সফরে স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। উভয় সফরেই ৪০-এর অধিক উইকেট লাভ করেছেন। সবমিলিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২ টেস্টে অংশ নিয়ে ১৯.৩৩ গড়ে ৮৩ উইকেট দখল করেন। অদ্যাবধি অ্যাশেজের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ক্রিকেট তারকার পরিচিতি পেয়ে আসছেন।

১৯৭২-৭৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিদ্যালয় বালকদের ক্রিকেট দলে খেলার জন্যে মনোনীত হন। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে পেস বোলার হিসেবে উত্থান ঘটে। তবে, শক্তিধর দলটির নিয়মিত সদস্য হবার জন্যে কঠোর পরিশ্রম ও দীর্ঘ সময় ধরে অনুশীলন করতেন। ১৯৭৮ সাল শেষ হওয়া পর্যন্ত অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলে শৌখিন খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নিতেন। কেবলমাত্র এর পরই ক্রিকেট খেলাকে স্থায়ীভাবে বেছে নিতে মনস্থঃ করেন। পিতা উইলিয়াম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সেন্টার হাফ-ব্যাক অবস্থানে খেলতেন। রাজ্যের কোল্টস দলের পক্ষে ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগেই উদ্বোধনে নামতেন। পার্থের অ্যাকুইনাস কলেজে অধ্যয়নকালে পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে উভয় খেলাতেই অগ্রসর হন।

পরের মৌসুমে মেলবোর্নে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে কোল্টের খেলায় ৬ উইকেট পান ও সকলের মনোযোগ কাড়েন। এ পর্যায়ে স্বল্প দূরত্ব দৌঁড়ে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন ও ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া দলে যুক্ত হন। বড় ধরনের লীগে তাঁর প্রথম উপস্থিতিটা ভালো হয়নি। জিলেট কাপে নিজস্ব দ্বিতীয় ওভারে ইয়ান চ্যাপেল ২৪ রান তুলে নেন। এরপর, ১৮ বছর বয়সে শেফিল্ড শীল্ডে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে। ৫/৬৩ বোলিং পরিসংখ্যান গড়লেও মাংসপেশীতে টান পড়ে। পরবর্তী ছয় বছর দলে আসা-যাবার পালায় ছিলেন।

দুইবার রাজ্য দল থেকে বাদ পড়েন। নিজেকে মেলে ধরার প্রাণান্তঃকর প্রয়াস চালান। ক্যারি প্যাকারের পরিচালনায় বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে সেরা খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণের পর অস্ট্রেলিয়া দলে তাঁর ঠাই হয়নি। কিম হিউজের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে ভারত গমন থেকে বঞ্চিত হন। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার কোচ ড্যারিল ফস্টারের তত্ত্বাবধানে শারীরিক সুস্থতার দিকে নজর দেন। মৌসুম বহির্ভূত সময়ে গল্ফ, স্কোয়াশ ও দৌঁড়ে অংশ নেন। ১৯৮০-৮১ মৌসুমে শেফিল্ড শীল্ডে ৩২ উইকেট লাভ করে ইংল্যান্ড গমনার্থে নিজেকে জাতীয় দলে নিয়ে যান।

১৯৮১-৮২ মৌসুমেও খেলার ধারা উত্তরোত্তর সামনের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। শেফিল্ড শীল্ড প্রতিযোগিতায় নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে ৮৮ রান খরচায় ১৪ উইকেট দখল করেন। এরফলে, প্রতিযোগিতার ইতিহাসে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বোলার হিসেবে খেলায় সেরা বোলিং পরিসংখ্যানের নতুন রেকর্ড গড়েন।

১৯৮১ সালে ‘ইয়ান বোথামের অ্যাশেজ’ নামে পরিচিত সিরিজে উদীয়মান মিডিয়াম-পেসার হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে। ঐ বছর কিম হিউজের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ট্রেভর চ্যাপেলের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ১৮ জুন, ১৯৮১ তারিখে নটিংহামে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। জিওফ বয়কটকে বিদেয় করে প্রথম উইকেট পান। ইয়ান বোথামকে বোল্ড করে ঐ ইনিংসে চার উইকেট লাভ করেন। ইংল্যান্ডের ১৮৫ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়া ১৭৯ রান করে। টেস্ট অভিষেকে নয় উইকেট দখল করেছিলেন। ডেনিস লিলি’র সাথে উইকেট ভাগাভাগি করে ১২৫ রানে গুটিয়ে দেন ও অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজে এগিয়ে নিয়ে যান।

তবে, হেডিংলি টেস্টে প্রতিপক্ষীয় ইয়ান বোথামের অনন্য ভূমিকার কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অভিষেকের দুই টেস্ট পর বোথাম লিডসে অবিস্মরণীয় কীর্তিগাঁথা স্থাপন করেন। ফলো-অনের পরও ইংল্যান্ডকে বিস্ময়কর জয়লাভে অভূতপূর্ব ঘটনার স্বাক্ষর রাখেন। একই ইনিংসে তিনি নিজস্ব প্রথম পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান। ইংল্যান্ডকে দুমড়ে মুচড়ে দেন তবে, ফলাফলে ভিন্নতা চলে আসে। গ্রাহাম ডিলিকে বোল্ড ও বব উইলিসকে কট আউটে বিদেয় করে ৬/১৩৫ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। পরবর্তীতে ইংল্যান্ড দল নিজেদেরকে সামলে নেয় ও বাদ-বাকীটুকু ইতিহাস হয়ে যায়।

বার্মিংহামে পরের টেস্টে আবারও সফল হন। ৫/৪২ ও ৩/৪৪ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে দলকে মাত্র ১৫১ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় নিয়ে যান। কিন্তু, ইয়ান বোথাম আবারও তাঁকে ছাপিয়ে যান। ২৮ বলে একটিমাত্র রান খরচ করে ৫ উইকেট তুলে নেন ও অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস ১২১ রানে থেমে যায়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় ছিল যে, তাঁর স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলার মাধ্যমে ইংল্যান্ড জয় পায়। ম্যানচেস্টারে প্রথম ইনিংসে চার ও দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ইয়ান বোথাম শতক হাঁকান। আবারও অল-রাউন্ডারকে বিদেয় করেন। তাসত্ত্বেও, অস্ট্রেলিয়া তৃতীয় পরাজয়ের কবলে পড়ে।

একই সফরের ১৩ আগস্ট, ১৯৮১ তারিখে ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৪/৮৮ ও ৫/১০৯ লাভ করেন। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ২* ও ০ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। ইয়ান বোথামের অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ১০৩ রানে পরাভূত হলে ছয়-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।

অ্যাশেজ সিরিজ শেষ হবার পরও নিজের স্বর্ণালী সময়ে অবস্থান করছিলেন। ৬ টেস্ট থেকে ৪২ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলীয়দের মধ্যে সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট লাভের কৃতিত্ব গড়েন। ১৯৫৬ সালে জিম লেকারের এক সিরিজ থেকে ৪৬ উইকেট লাভের পর এটিই সর্বোচ্চ উইকেট লাভের নজির ছিল। এছাড়াও, এক সিরিজে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় এ সংগ্রহটি চতুর্থ স্থানে রয়েছে। অবশ্য পূর্ববর্তী মৌসুমে এডিনবরাভিত্তিক ওয়াটসোনিয়ান্সের পক্ষে খেলে ব্রিটিশ পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে এ সফলতা পেয়েছিলেন।

আট বছর পর ১৯৮৯ সালে পুণরায় ইংল্যান্ডের মাটিতে আরও ৬ টেস্টে ৪১ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে ৪-০ ব্যবধানে পরাজিত করতে সবিশেষ ভূমিকা রাখেন।

ইংল্যান্ডে সুইংয়ে বেশ সফলতা পান। স্বল্প দূরত্ব নিয়ে বুক বরাবর বল লাফিয়ে যেতো। এজবাস্টনে অনুশীলনকালে ডেনিস লিলি তাঁকে দীর্ঘ দূরত্ব নিয়ে বোলিংয়ের পরামর্শ দেন। বলে সিম আনয়ণ করেন ও খুব দ্রুত ইংরেজ ব্যাটসম্যানদের কাছে দূর্বোধ্যরূপে চিত্রিত হন। ঐ টেস্টগুলোয় শুধুমাত্র বলে সিম আনেননি, বরঞ্চ, অস্ট্রেলিয়ার মাটির চেয়েও অধিক দ্রুতগতিতে বল করেছিলেন। ছয় ফুট আড়াই ইঞ্চি উচ্চতা নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে একাধারে বাতাসের মধ্যেও বোলিংয়ে সক্ষম ছিলেন অনেকটা লিলি’র ন্যায় বোলিং অংশীদারের কারণে। তিনি মন্তব্য করেছেন যে, ‘যখন অপর প্রান্তে ডেনিস অবস্থান করবেন, তখন উইকেট লাভেরও সমূহ সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও পুরো সিরিজের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে যে, উইকেটও পর্যাপ্ত সহায়তা করেছে।’

১৭ টেস্টে ২১.১৭ গড়ে ১০০ উইকেট পান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কেবলমাত্র গ্লেন ম্যাকগ্রা ও ডেনিস লিলি অ্যাশেজ সিরিজ থেকে অধিক উইকেট পেয়েছেন। নতুন বল নিয়ে ডেনিস লিলি’র সাথে বোলিং আক্রমণ শানতেন। এ জুটির ভূমিকা অনেকাংশে জেফ থমসন ও লেন পাস্কো’র অনুরূপ ছিল। তাঁর এ সাফল্যের রহস্য সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, অপর প্রান্তে ডেনিস লিলি’র ভূমিকা গ্রহণ ও বাদ-বাকী ইংরেজ পিচের কারণে হয়েছে।

দুইবার দীর্ঘ সময় ধরে অস্ট্রেলিয়া দলের বাইরে ছিলেন। হাসির ন্যায় তাঁর বোলিংশৈলী দুর্বোধ্য ছিল। বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেট তারকা গ্রাহাম গুচ সাতবার তাঁর শিকারে পরিণত হয়েছেন। তন্মধ্যে, ১৯৮৯ সালে গ্রাহাম গুচকে পুরোপুরি বোকাবনে ফেলে বিদেয় করেছিলেন ও টেস্ট দল থেকে চলে যাবার কথা বলেছিলেন। ৩১ জুলাই, ১৯৮৯ তারিখে ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ টেস্টের চতুর্থ দিনে পাঁচটি উইকেট লাভকালীন ইয়ান বোথাম তাঁর শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। ঐ সিরিজে ব্যক্তিগতভাবে পুরোপুরি সফলতা পান।

১৯৮১-৮২ মৌসুমে নিজ দেশে জাভেদ মিয়াঁদাদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ১৩ নভেম্বর, ১৯৮১ তারিখে পার্থে সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অপূর্ব ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ৪/৩৬ ও ২/৪৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর অসাধারণ বোলিং সাফল্যে স্বাগতিকরা ২৮৬ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

একই মৌসুমে গ্রেগ চ্যাপেলের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮২ তারিখে ওয়েলিংটনে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ১/৯৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলাটিতে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও পঞ্চম দিন খেলাটি মাঠে গড়ায়। তন্মধ্যে, কেবলমাত্র পঞ্চম দিন পুরোটা সময় খেলা সম্ভব হয়। তিনি ব্যাটিং করার সুযোগ পাননি। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

অস্ট্রেলিয়ায় উদীয়মান তারকা হিসেবে প্রত্যাবর্তন করেন। তবে, খুব শীঘ্রই ক্রিকেটের জগতে ঝগড়া-বিবাদ পর্যবেক্ষণ করেন। পার্থ টেস্টে বেশ কিছু উইকেট দ্রুত লয়ে পতনসহ ডেনিস লিলি-জাভেদ মিয়াঁদাদের মধ্যকার নিন্দাজনক ঘটনা দেখেন। প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও সফলতা পাননি। অবশেষে, দেড় বছর পর ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাশেজ সিরিজ খেলতে ইংরেজরা আসে।

পার্থে সারাদিন ক্রিস টাভারে ব্যাটিং করে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন। তন্মধ্যে, সোয়া ঘণ্টা রানবিহীন অবস্থায় সময় অতিবাহিত করেন। প্রথমদিন শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ২৪২/৪ হয়। পরদিন সকাল গড়িয়ে বিকেল হলেও ইংরেজ ব্যাটসম্যান অনড় অবস্থানে ছিলেন। ইংরেজ সমর্থকেরাও ক্ষীপ্ত হয়ে উঠে। অষ্টম উইকেট পতনের পর বব উইলিসকে বোলিং করেন ও স্লিপ অঞ্চলে ঠেলে দিয়ে ৪০০ রানের কোটা স্পর্শ করে। ইংরেজ কিশোরেরা মাঠে আনন্দ উল্লাস করতে থাকে। ওভার শেষে স্কয়ার লেগ অঞ্চল দিয়ে সীমানা এলাকায় ফিল্ডিং করতে চলে যান। ১৯ বছর বয়সী ইংরেজ অভিবাসী গ্যারি ডনিনসন পিছন থেকে তাঁকে ধাক্কা মেরে প্যাভিলিয়নের দিকে চলে যায়। ৪৩ ওভারে একমাত্র উইকেট পেয়েছিলেন। কোন পুলিশ ছিল না ও অল্ডারম্যান তাঁর পিছু ধাওয়া করে মাঠে রাগবি দণ্ড দিয়ে আঘাত করলে দূর্ভাগ্যজনকভাবে কাঁধে প্রচণ্ড আঘাত করেন। ডেনিস লিলি এসে গ্যারি ডনিনসনকে রক্ষা করেন। অপর অস্ট্রেলীয় তারকা ক্রিকেটার অ্যালান বর্ডার তাঁর সহায়তায় এগিয়ে আসেন ও পুলিশী জেরা থেকে বাঁচান।

গ্যারি ডনিনসনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় ও ৫০০ ডলার জরিমানাসহ ২০০ ঘণ্টা সম্প্রদায়ের সেবামূলক কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়। অপরদিকে তিনি এক বছরের জন্যে প্রতিযোগিতামূলক কোন খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। এ পর্যায়ে আট মাস ধরে প্রতিদিন এক মাইল সাঁতার কাটতেন। অনেক বছর পর বব উইলিস মন্তব্য করেন যে, ‘দূর্গম ও নীরব শহর পার্থে বিস্ময়করভাবে বড় ধরনের হুলস্থূল ঘটনায় জেগে উঠে। তবে, টেরি অল্ডারম্যানও দুষ্টুমিবশতঃ ঐ আহাম্মককে শাস্তি দেয় ও আহত করে নিজের খেলোয়াড়ী জীবনকে পিছনের দিকে ঠেলে দিয়েছে।’

স্বীকারোক্তিকালে তিনি শীর্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে এ ধরনের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ায় অনুতপ্ত হন ও ডনিনসনকে ক্ষমা করে দেন। ‘আমি শুনেছি যে সে না-কি আচরণ সংশোধন করেছে এবং খ্রিস্টান ধর্মে পুনঃজন্ম লাভ করেছে। তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান আছে। তাহলে বেশ ভালো ফলাফলই এসেছে।’ পার্থে কাঁধে রাগবি দণ্ড নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনকে পুরোপুরি ভিন্ন দিকে নিয়ে যায়। ওরচেস্টারশায়ারের পক্ষে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলার প্রস্তাবনা নাকচ করে দেন।

অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে পুণরায় খেলার জগতে ফিরে এসে বোলিং করার সুযোগ পান। অজি দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা পান। পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ন্যায় ভীতিকর দ্বীপপুঞ্জ গমন করেন। তিন টেস্টে অংশ নিয়ে মাত্র ৪ উইকেট পান। তবে, পোর্ট অব স্পেনে নিজস্ব সেরা মুহূর্ত উদযাপন করেন। ব্যাট হাতে যখন মাঠে নামেন তখন দল নিশ্চিত পরাজয়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। অপর প্রান্তে অ্যালান বর্ডার ছিলেন। খেলোয়াড়ী জীবনের ব্যাটিং গড় ৫-এর কম হলেও এ সময়ে তিনি তৎকালীন ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১২ রান তুলেন। ৯৫ মিনিট ব্যাটিং করে অ্যালান বর্ডারের সাথে টেস্ট রক্ষা করেন। এ সময়ে বামহাতি ব্যাটসম্যানকে শতক হাঁকাতেও সহায়তা করেছিলেন।

তবে এ সফরে উইকেট সংগ্রহ করতে না পারার খেসারত গুণতে হয়। দল থেকে বাদ পড়েন ও চার বছর পর খেলোয়াড়ী জীবনের দ্বিতীয় স্বর্ণালী অধ্যায়ের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। এ পর্যায়ে ১৯৮৫-৮৬ ও ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিদ্রোহী দলের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করায় তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা কবলে পড়েন। এরফলে, ১৯৮৫ সালে ইংল্যান্ড সফর থেকে উপেক্ষিত হন। ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে টেস্ট দলে ফিরে এসেই গর্জে উঠেন।

১৯৮৯ সালে অ্যালান বর্ডারের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। বোলিং আক্রমণ পরিচালনা করতে থাকেন। লিডসে উভয় ইনিংসে পাঁচ-উইকেট নিয়ে দলকে ২১০ রানে জয় এনে দেন ও ১৯৮১ সালে স্মরণীয় ক্ষত ঘটনাগুলো মুছে ফেলতে শুরু করেন। পুরো গ্রীষ্ম জুড়েই ক্রমাগত উইকেট পেয়ে যাচ্ছিলেন। ৮ জুন, ১৯৮৯ তারিখে হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে অপূর্ব ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। খেলায় তিনি ৫/১০৭ ও ৫/৪৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, কোন ইনিংসেই তাঁকে ব্যাট হাতে নিয়ে মাঠে নামতে হয়নি। তাঁর অসাধারণ বোলিং সাফল্যে সফরকারীরা ২১০ রানে জয় পেলে ছয়-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

লর্ডসের দ্বিতীয় ইনিংসে ছয় উইকেট নিয়ে দলকে আরও একটি জয় উপহার দেন। ম্যানচেস্টারে প্রথম ইনিংসে ৫/৬৬ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া আরও একটি জয় পান। ট্রেন্ট ব্রিজে আরও একবার পাঁচ-উইকেট পান। এ পর্যায়ে মাইক অ্যাথার্টনের অভিষেকে শূন্য রানে বিদেয় করেন। ইংল্যান্ড কোনক্রমে ওভালের চূড়ান্ত টেস্টটি ড্র করতে সমর্থ হয়। তাসত্ত্বেও ৫/৬৬ নিয়ে সিরিজ শেষ করেন। এ পর্যায়ে সিরিজে ছয়বার পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান। অবিস্মরণীয় ফলাফলের স্বীকৃতিস্বরূপ ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৮৯-৯০ মৌসুমে অ্যালান বর্ডারের নেতৃত্বাধীন অজি দলের অন্যতম সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ১৫ মার্চ, ১৯৯০ তারিখে ওয়েলিংটনে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে জেজি রাইটের প্রথম উইকেট লাভ করে টেস্টে ১৫০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন। বল হাতে নিয়ে ৪/৪৬ ও ০/২৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ ও ১ রান সংগ্রহ করেন। প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ক জন রাইটের অনবদ্য ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৯ উইকেটে জয় পায়।

আরও দুই বছর খেলেছিলেন। নিজ দেশে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্টে অংশ নিয়েও সফল হন। অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাশেজ সিরিজেও অংশ নেন; তবে, পূর্বেকার মতো বল কিংবা ব্যাট হাতে নিয়ে সফল হননি।

১৯৯০-৯১ মৌসুমে নিজ দেশে গ্রাহাম গুচের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ৪ জানুয়ারি, ১৯৯১ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২৬* ও ১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ৩/৬২ ও ০/২৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। মাইকেল অ্যাথার্টনের বীরত্বপূর্ণ শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

একই মৌসুমে অ্যালান বর্ডারের নেতৃত্বাধীন অজি দলের অন্যতম সদস্যরূপে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ২৭ এপ্রিল, ১৯৯১ তারিখে সেন্ট জোন্সে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০/৪২ ও ১/৬৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে ০ ও ০* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, মার্ক টেলরের অনবদ্য ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ১৫৭ রানে জয় পেলেও ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

সবমিলিয়ে টেস্টগুলো থেকে ২৭.১৫ গড়ে ১৭০ উইকেট দখল কৃতিত্বের পরিচয় দেন। তন্মধ্যে, ইংরেজদের বিপক্ষে পেয়েছেন ১০০ উইকেট। তন্মধ্যে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯.৩৩ গড়ে ৮৩ উইকেট সংগ্রহ করেছেন। কেবলমাত্র জিম লেকার ও ম্যালকম মার্শাল নিজ দেশে তাঁর তুলনায় শ্রেয়তর গড়ে এগিয়ে আছেন।

এগারোবার পাঁচ-উইকেট ও একবার দশ-উইকেটের সন্ধান পান। তবে, রান সংগ্রহে বিপরীত চিত্র তুলে ধরেন। মাত্র ৬.৫৪ গড়ে ২১২ রান তুলতে পেরেছিলেন। সচেতন থাকলে ১৯৮৫ সালের অ্যাশেজ সিরিজেও যুক্ত রেখে নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারতেন। এগারো নম্বর অবস্থানে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ২৬৫টি প্রথম-শ্রেণীর ইনিংস থেকে একবার মাত্র অর্ধ-শতকের গণ্ডী অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

স্লিপ অঞ্চলে দূর্দান্ত ফিল্ডার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৮১ সালের প্রথম অ্যাশেজ সফরে উইকেট লাভের পর থেকে উইকেটের কাছাকাছি ফিল্ডিং করতেন। টেস্টগুলোয় ২৭ ক্যাচ মুঠোয় পুড়েন। সব মিলিয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৯০ ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন।

অ্যাশেজের বীর হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তাঁর পরিবারের অপর সদস্যও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। কনিষ্ঠ ভগ্নী ডেনিস অল্ডারম্যান অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষসারির ব্যাটার ছিলেন। ৭ টেস্টের সবগুলো ইংল্যান্ড মহিলা দলের বিপক্ষে খেলে ৪১.২৭ গড়ে রান পেয়েছেন। স্বীয় ভ্রাতার বিপরীতে নিজ দেশে সফল ছিলেন। ৫০.৩৩ গড়ে ৪৫৩ রান তুলেন। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ করেন ১২১ রান। তবে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২ টেস্ট থেকে মাত্র ১ রান পেয়েছেন। পরবর্তীতে ডেনিস অল্ডারম্যান, মুত্তিয়া মুরালিধরনের বিপক্ষে বল নিক্ষেপ বিতর্কে জড়িয়ে পড়া আম্পায়ার রস এমারসনের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হয়েছিলেন।

অনিন্দ্য সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮২ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন। অস্ট্রেলিয়া দল থেকে দুইবার দীর্ঘ সময় বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য হন। ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে পার্থে ইংরেজদের মাঠে প্রভাব বিস্তারকালে কাঁধে বিরাট চোট পান। এরপর, তৎকালীন নিষিদ্ধ ঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্রোহী দলের সদস্যরূপে যোগদানের খেসারত গুণতে হয়। ফলশ্রুতিতে, অবশ্যম্ভাবী সদস্য হিসেবে ইংল্যান্ড গমন করা থেকে বঞ্চিত হন।

গ্লুচেস্টারশায়ার ও কেন্ট দলের সদস্যরূপে দূর্দান্ত খেলেন। অবসর গ্রহণের পরও ক্রিকেটের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। অস্ট্রেলিয়ায় বেতার ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এছাড়াও, নৈশভোজন পরবর্তী বক্তা ছিলেন। ইংল্যান্ডে অ্যাশেজ সিরিজকে ঘিরে কিছু বাক্য প্রয়োগে পরিবেশ উত্তপ্ত করেন। ২০০৫ সালের অ্যাশেজে ইংরেজ স্পিন বোলিং আক্রমণ সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, ‘যদি অ্যাশলে জাইলসের বলে আমাদের কোন ব্যাটসম্যান বিদেয় নেন, তাহলে তারা নিজেরাই লজ্জায় মরে যাবে।’ দূর্ভাগ্যজনকভাবে ১৯৮৯ সালে ৪১ উইকেট লাভের পর অস্ট্রেলিয়া দল প্রথমবারের মতো সিরিজে পরাজিত হয়েছিল।

বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেট তারকা মাইকেল অ্যাথার্টন ‘ওপেনিং আপ’ আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থে তাঁর টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের প্রথম ইনিংসে টেরি অল্ডারম্যানের বোলিং সম্পর্কে ব্যক্ত করেছেন যে, ‘প্রথম বলটি লেগ-সাইড থেকে সাধারণ মানে ধেঁয়ে আসে। মিডিয়াম পেসার হিসেবে তিনি দীর্ঘ দূরত্ব নিয়ে বোলিং কর্মে অগ্রসর হওয়ায় ব্যাটসম্যানেরা কিছুটা চিন্তা করার সময় পায়। দ্বিতীয় বলটি সঙ্কুচিত ভঙ্গীমায় সাঁই করে আসে ও আমার স্নায়ুকে দূর্বল করে দেয়। বলটি সোজা ও পূর্ণ বেগে সামনের প্যাডে স্পর্শ করে। নাইজেল প্লিউস আঙ্গুল তুলে প্যাভিলিয়নে ফিরে যাবার নির্দেশ দেন। এরফলে, লেন হাটন ও গ্রাহাম গুচের সাথে অভিষেকে শূন্য রান নিয়ে বিদেয় নেই।’

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। ডিসেম্বর, ১৯৭৭ সালে জেন এলিজাবেথ জনসন নাম্নী ডার্বিশায়ারের বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। পার্থে তাঁদের পরিচয় ঘটে।

Similar Posts

  • | | | |

    হাসান তিলকরত্নে

    ১৪ জুলাই, ১৯৬৭ তারিখে কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ, রাজনীতিবিদ ও প্রশাসক। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। নাছোড়বান্দা ও ক্রিজ আঁকড়ে থাকতেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার উত্থান পর্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। বিদ্যালয় পর্যায়ের ক্রিকেটে দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। শুরুতে…

  • |

    সেলিম ইলাহী

    ২১ নভেম্বর, ১৯৭৬ তারিখে পাঞ্জাবের শাহীওয়ালে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৯৯৫-৯৬ মৌসুম থেকে ২০১০-১১ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, লাহোর ও ইউনাইটেড ব্যাংক লিমিটেডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।…

  • | |

    লিন্ডসে টাকেট

    ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯১৯ তারিখে নাটালের ডারবানে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন। ১৯৪০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ফাস্ট বোলিং তারকার মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে নিজের সেরা সময়টুকু হারিয়ে ফেলেন। তাসত্ত্বেও,…

  • |

    নীল ব্রুম

    ২০ নভেম্বর, ১৯৮৩ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ মাঝারিসারিতে ব্যাটিং করতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ২০০২-০৩ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রেখেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ওতাগো ও ক্যান্টারবারি এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০০২ সালে নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে…

  • | | |

    টম লরি

    ১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৮ তারিখে হকস বে’র ফার্নহিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন। পাশাপাশি, ডানহাতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শী ছিলেন ও ডানহাতে স্লো-মিডিয়াম বোলিং করতেন। ১৯৩০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও, নিউজিল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। নিউজিল্যান্ড দলের টেস্ট ক্রিকেটের সূচনালগ্নে অন্যতম ভূমিকা রাখেন। উইকেট-রক্ষণের দায়িত্বে থেকে…

  • |

    আর্থার মেইলি

    ৩ জানুয়ারি, ১৮৮৬ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের জেটল্যান্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, ব্যাঙ্গচিত্রবিদ ও সাংবাদিক ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯২০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। জন হ্যাম্বলটন মেইলি ও জেন শার্লত দম্পতির তৃতীয় পুত্র ছিলেন। ১৩ বছর বয়সে ওয়াটারলু পাবলিক স্কুল থেকে চলে…