|

তালহা জুবায়ের

১০ ডিসেম্বর, ১৯৮৫ তারিখে ফরিদপুরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ২০০০-এর দশকে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

২০০১-০২ মৌসুম থেকে ২০১৪ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন সরব রাখেন। শুরু থেকেই প্রতিভাবান ক্রিকেটারের মর্যাদা পান। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে মধ্যাঞ্চল ও ঢাকা মেট্রোপলিসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

স্বল্প দূরত্ব নিয়ে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ২০০১ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বোলিং শিবিরে বিখ্যাত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান তারকা বোলার অ্যান্ডি রবার্টসের দৃষ্টিগোচরীভূত পেস বোলারদের অন্যতম ছিলেন। প্রতিশ্রুতিশীল ও অপার সম্ভাবনাময় দুইজন ফাস্ট বোলারের অন্যতম হিসেবে মাশরাফি বিন মর্তুজা’র সাথে ছিলেন। তবে, সম্ভাবনার দ্বারকে কখনো পরিপূর্ণভাবে মেলে ধরতে পারেননি। মাশরাফি বিন মর্তুজা’র পর অভিষেকের এক বছর পর টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। তাঁর সাথে তুলনান্তে অধিক ক্ষীপ্রগতিসম্পন্ন ছিলেন।

২০০২ থেকে ২০০৪ সময়কালে বাংলাদেশের পক্ষে সাতটিমাত্র টেস্ট ও ছয়টিমাত্র ওডিআইয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ২০০২ সালে খালেদ মাসুদের অধিনায়কত্বে শ্রীলঙ্কা সফরে যান। ২১ জুলাই, ২০০২ তারিখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম অংশ নেন। আলমগীর কবির, এহসানুল হক ও হান্নান সরকারের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। কলম্বোর পিএসএসে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে ১৬ বছর ২২৩ দিন বয়স নিয়ে নতুন বলে বোলিং আক্রমণে অংশ নেন। প্রথম ধাঁপেই মারভান আতাপাত্তুমাহেলা জয়াবর্ধনেকে বিদেয় করেন। তবে, খেলার বাদ-বাকী সময়ে বাংলাদেশ দলকে নিরাশ হতে হয়। ২/১২০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ০* ও ৫* রান সংগ্রহ করেছিলেন। ইনিংস ও ১৯৬ রানে জয় পেয়ে স্বাগতিক দল দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। একই সফরের ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০০২ তারিখে কলম্বোর এসএসসিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর ওডিআই অভিষেক হয়।

২০০২-০৩ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে খালেদ মাসুদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ১৮ অক্টোবর, ২০০২ তারিখে ইস্ট লন্ডনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৩* ও ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/১০৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। গ্রায়েম স্মিথের অনবদ্য দ্বি-শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ১০৭ রানে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজস্ব দ্বিতীয় ওডিআইয়ে চার-উইকেট পান। এ পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রকৃত মানসম্পন্ন ফাস্ট বোলার হিসেবে চিত্রিত হতে থাকেন। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় দলের সদস্য হিসেবেও যুক্ত হলেও আঘাতের কারণে তাঁকে দেশে ফিরে আসতে হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার প্রায় দুই বছর পর ডিসেম্বর, ২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে খেলায় অংশ নেন। কিন্তু ঐ ইনিংসে উইকেট শূন্য অবস্থায় মাঠ ত্যাগ করতে হয় ও দল থেকে বাদ পড়েন।

তবে, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের ষষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমে দল ১২৪ রানে গুটিয়ে গেলেও তিনি ৩১ রান তুলে শীর্ষ রান সংগ্রাহকে পরিণত হয়েছিলেন। অবশ্য, প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। ১৭ ডিসেম্বর, ২০০৪ তারিখ থেকে শুরু হওয়া চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত সফররত ভারত দলের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে এ কৃতিত্বের পরিচয় দেন। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। ঐ টেস্টে তাঁর দল ইনিংস ও ৮৩ রানে পরাজয়বরণসহ ২-০ ব্যবধানে সিরিজে পরাজিত হয়।

মাত্র একটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ও তিনটি লিস্ট-এ ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণের পর জাতীয় দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। তবে, কয়েক মৌসুম পূর্ব থেকে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে নিয়মিতভাবে খেলে আসছিলেন। আঘাত তাঁর নিত্য সঙ্গী ছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটে সুন্দর ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখলেও জাতীয় দলের পক্ষে শুরুরদিকের প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর পরবর্তীতে আর ধরে রাখতে পারেননি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হলেও ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে ঠিকই সফলতা পাচ্ছিলেন।

Similar Posts

  • | |

    ডেভিড ওয়ার্নার

    ২৭ অক্টোবর, ১৯৮৬ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্যাডিংটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে লেগ-ব্রেক কিংবা ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। অসাধারণ ফিল্ডিং করে থাকেন। অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিধ্বংসী ও ক্ষীপ্রতা সহকারে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হয়ে থাকেন। হাওয়ার্ড ওয়ার্নার…

  • |

    সানোয়ার হোসেন

    ৫ আগস্ট, ১৯৭৩ তারিখে ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। দলে মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী। বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। সামনের পায়ের উপর ভর করে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে নিয়মিতভাবে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুম থেকে ২০০৫-০৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন।…

  • |

    আবিদ আলী

    ১৬ অক্টোবর, ১৯৮৭ তারিখে পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী। পাকিস্তানে পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ২০০৭ সাল থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে বালুচিস্তান, ফেডারেলি এডমিনিস্টার্ড ট্রাইবাল এরিয়াজ, হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামাবাদ, নর্থ ওয়েস্ট ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্স-বালুচিস্তান, পাকিস্তান স্টেট ব্যাংক,…

  • | |

    গ্যারি সোবার্স

    ২৮ জুলাই, ১৯৩৬ তারিখে বার্বাডোসের চেলসী রোড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, বামহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স কিংবা বামহাতে রিস্ট-স্পিন বোলিংয়ে দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী তিনি। ১৯৫২-৫৩ মৌসুম থেকে ১৯৭৪ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন…

  • |

    ব্রেন্ডন ম্যাককালাম

    ২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮১ তারিখে ওতাগোর ডুনেডিনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম কিংবা ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ডানহাতে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পরিচিতি লাভ করেন। ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ‘বাজ’ ডাকনামে পরিচিতি পান। দ্রুত সাড়া…

  • | | |

    ওয়াল্টার রবিন্স

    ৩ জুন, ১৯০৬ তারিখে স্টাফোর্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। যুদ্ধের পূর্বে স্টাফোর্ডশায়ারের পক্ষে অংশগ্রহণকারী পিতা ও পরবর্তীতে ল্যাঙ্কাশায়ারের সাবেক পেশাদার ক্রিকেটার আলবার্ট নাইটের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেন।…