|

ইমরান তাহির

২৭ মার্চ, ১৯৭৯ তারিখে পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ২০১০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সকল স্তরে অংশ নিয়েছেন।

৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। রমজান তাহির ও আতিয়া তাহির দম্পতির সন্তান। তাঁর আরও দুই ভ্রাতা রয়েছে। ক্রিকেট বহির্ভূত উদ্দেশ্য নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় অভিবাসিত হন। এক পর্যায়ে বিভিন্ন ক্রিকেট দলে খেলেন ও পরবর্তীতে বৃহৎ আসরে অংশ নেন।

১৯৯৬-৯৭ মৌসুম থেকে ২০১৭-১৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ডলফিন্স, ইস্টার্নস, টাইটান্স, লায়ন্স ও ওয়ারিয়র্স এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ার, ডারহাম, হ্যাম্পশায়ার, মিডলসেক্স, নটিংহ্যামশায়ার, সারে, ওয়ারউইকশায়ার ও ইয়র্কশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আটটি কাউন্টি ক্লাবে অংশ নিয়ে অনন্য নজির গড়েন। এছাড়াও, চেন্নাই সুপার কিংস, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, দূরন্ত রাজশাহী, ইস্টার্ন ট্রান্সভাল, গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স, লাহোর সিটি, লাহোর লায়ন্স, লাহোর রবি, লাহোর হোয়াইটস, মেলবোর্ন রেনেগাডেস, মুলতান সুলতান্স, নেলসন ম্যান্ডেলা বে জায়ান্টস, নর্থ ইস্টার্ন ট্রান্সভাল, পাকিস্তান নর্থ, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স, রেডকো পাকিস্তান লিমিটেড, রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টস, সিয়ালকোট, স্টাফোর্ডশায়ার, পাকিস্তান সুই গ্যাস কর্পোরেশন, সিলেট থান্ডার, ওয়াটার এন্ড পাওয়ার ডেভেলপম্যান্ট অথরিটি ওয়ার্ল্ড মাস্টার্সের পক্ষে খেলেছেন।

১৯৯৬-৯৭ মৌসুম থেকে ২০১৭ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২০ তারিখে নূর আহমদের সাথে মেলবোর্ন রেনেগাডেসের পক্ষে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। তবে, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে বিবিএল থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন।

২০১১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ২০ টেস্ট, ১০৭টি ওডিআই ও ৩৮টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১১ তারিখে দিল্লিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন।

২০১১-১২ মৌসুমে নিজ দেশে মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ৯ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ভার্নন ফিল্যান্ডারের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ০/৩৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, অপর অভিষেকধারী ভার্নন ফিল্যান্ডারের অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ৭ মার্চ, ২০১২ তারিখে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ১/৫৫ ও ১/৩৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। দলীয় অধিনায়কের অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর বদান্যতায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

২০১২-১৩ মৌসুমে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ২২ নভেম্বর, ২০১২ তারিখে অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০/১৮০ ও ০/৮০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১০* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, ফাফ ডু প্লিসি’র অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়।

২০১৫-১৬ মৌসুমে হাশিম আমলা’র নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের অন্যতম সদস্যরূপে ভারত গমন করেন। ৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ তারিখে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১/৬৬ ও ১/৭৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ১ ও ০* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। অজিঙ্কা রাহানে’র জোড়া শতকের বদৌলতে সফরকারীরা ৩৩৭ রানে পরাজিত হলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

টেস্টগুলো থেকে দুইবার পাঁচ-উইকেটসহ ৫৭ উইকেট দখল করেছেন। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এরপর, ক্রিকেট জগৎকে বিদেয় জানান। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে টি২০আইয়ে সর্বাধিক উইকেটসহ স্পিনার হিসেবে ওডিআইয়ে সর্বাধিক উইকেট সংগ্রহের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন।

২০১৭ সালে ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা কর্তৃক বর্ষসেরা টি২০আই খেলোয়াড় হিসেবে মনোনীত হন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। ২০ জানুয়ারি, ২০০৭ তারিখে সুমাইয়া দিলদার নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির জিবরান নামীয় পুত্রসন্তান রয়েছে।

Similar Posts

  • | |

    ব্রুস টেলর

    ১২ জুলাই, ১৯৪৩ তারিখে ক্যান্টারবারির তিমারু এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। পাশাপাশি, বামহাতে কার্যকর ব্যাটিং করতেন। ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে ১৯৭০-এর দশকের সূচনাকাল পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড দলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। বল হাতে নিয়ে উভয় দিক দিয়ে বোলিং আক্রমণে…

  • | |

    এডি বার্লো

    ১২ আগস্ট, ১৯৪০ তারিখে ট্রান্সভালের প্রিটোরিয়ায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘ব্লান্টার’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। ডানহাতে ইনিংস উদ্বোধনে নামতেন ও ডানহাতে মিডিয়াম-পেস বোলিং করতেন। খেলাকালীন চশমা পরিধান করতেন। মাঠ ও মাঠের বাইরে খুব সহজেই…

  • | |

    বিজয় মার্চেন্ট

    ১২ অক্টোবর, ১৯১১ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বোম্বেতে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। খুব কমসংখ্যক লোকই তাঁর প্রকৃত নাম বিজয়সিংহ মাধবজী থ্যাকার্সে সম্পর্কে অবগত আছেন। বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যে তাঁকে নেয়া হলে ইংরেজ প্রিন্সিপাল…

  • | | | | |

    কোর্টনি ওয়ালশ

    ৩০  অক্টোবর, ১৯৬২ তারিখে জ্যামাইকার কিংস্টনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, প্রশাসক, কোচ ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। পাশাপাশি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি (১.৯৭ মিটার) দীর্ঘ উচ্চতার অধিকারী। এরিক ওয়ালস ও জন ওলাস্টন দম্পতির সন্তান ছিলেন। বিদ্যালয়ের ছাত্র…

  • |

    ইয়াসির আলী

    ১৫ অক্টোবর, ১৯৮৫ তারিখে পাঞ্জাবের হাজরো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ২০০০-এর দশকে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পাকিস্তানের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলিং প্রতিভা ছিলেন। প্রচণ্ড দম নিয়ে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। আটকের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পক্ষে খেলাকালীন ইয়াসির আলী প্রথমবারের মতো…

  • |

    টম আর্মিটেজ

    ২৫ এপ্রিল, ১৮৪৮ তারিখে ইয়র্কশায়ারের শেফিল্ডের ওয়াক্লি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৮৭০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১৫ জুন, ১৮৭২ তারিখে কেইলি বনাম ওয়াকফিল্ডের মধ্যকার খেলার প্রথম ইনিংসে আট উইকেট ও দ্বিতীয় ইনিংসে দশ উইকেটের সবগুলো করায়ত্ত্ব করেন।…