Skip to content

মুশফিকুর রহিম

1 min read

৯ জুন, ১৯৮৭ তারিখে বগুড়ায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। উইকেট-রক্ষণের পাশাপাশি ডানহাতে মাঝারিসারিতে ব্যাটিংয়ে দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। বাংলাদেশের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও, বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রাণবন্ত ও ছোটখাটো ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী হিসেবে স্ট্যাম্পের পিছনে অবস্থান করেন। পাশাপাশি ব্যাট হাতে নিয়েও বেশ সফলতার স্বাক্ষর রাখছেন। ব্যাট হাতে মূল্যবান অবদানের পাশাপাশি স্পিন আক্রমণে গড়া বাংলাদেশ দলের উইকেট-রক্ষণের ক্ষেত্রেও বেশ ভালোভাবে সামাল দিচ্ছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটে ইতিহাসের সর্বকালের সেরা উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিগণিত হচ্ছেন। দলীয় সাফল্য ও শক্তিমত্তা বহুলাংশেই তাঁর উপর নির্ভরশীল। এছাড়াও, সর্বাপেক্ষা বিশ্বস্ত ব্যাটসম্যান হিসেবে দলের প্রয়োজনে নিজেকে মেলে ধরার ক্ষমতা রাখেন।

৩-৪ নম্বরের ন্যায় শীর্ষসারিতে, এমনকি ৫ বা ৬ নম্বরে খেলার সুযোগ খুব কমই পেয়েছি। অনেকবার ৭-৮ নম্বরে এমনকি ৯ নম্বরে পর্যন্ত ব্যাটিং করতে হয়েছে। একজন নতুন খেলোয়াড়ের পক্ষে এ ধরনের অবস্থানগুলোয় ভালোমানের ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখা ভীষণ কঠিন বিষয়। আমি বড় ধরনের মারে অক্ষম কিংবা আমার বয়স ২৫-২৮ নয়। অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকাকালীন শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পেরেছি ও আমি ঐ অবস্থানের উপযোগী। তবে, জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত হবার পর আমাকে মাঝারিসারিতে নীচেরদিকে এমনকি কয়েকবার একেবারেই নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতে নামানো হয়েছে।

২০০৪ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। যুবদের ওডিআই ও টেস্টে অংশ নেন। ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ সালে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করে কোয়ার্টার ফাইনালে স্থানে নিয়ে যান। ঐ প্রতিযোগিতায় তাঁর দল পঞ্চম স্থান দখল করে।

২০০৫ সালের শুরুরদিকে জিম্বাবুয়ে সফরে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সদস্যরূপে আশাতীত ভালো খেলা উপহার দেন। বুলাওয়েতে প্রথম টেস্টে শতক হাঁকান। পূর্ববর্তী বছরে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্য হিসেবে ইংল্যান্ড গমনেও ভালো খেলেন। টনটনে দ্বিতীয় টেস্টে ৮৮ রান সংগ্রহ করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণকালীন অনেক ক্রিকেটপ্রেমীরই ধারনা ছিল যে হয়তোবা বিদ্যালয় ছেড়ে সোজা খেলার মাঠে অথবা মায়ের কোল ছেড়ে ক্রিকেট পিচে নেমে এসেছেন। এখন তিনি দলের সর্বাপেক্ষা নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন ও সবকিছুই দায়িত্বের প্রতি তাঁর আপোষহীনতার কারণে সম্ভবপর হয়েছে। শুরুতে উইকেট-রক্ষক হিসেবে এবড়োথেবড়ো কিছু স্ট্রোক মেরে দায়িত্ব পালন করতেন। পরবর্তীতে ব্যাটিংয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে যথেষ্ট পরিপক্কতার পরিচয় দিয়ে চলেছেন।

২০০৪-০৫ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে উত্তরাঞ্চল, রাজশাহী বিভাগ ও সিলেট বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, বেক্সিমকো ঢাকা, খুলনা টাইগার্স, রাজশাহী কিংস, সিলেট রয়্যালস ও করাচী কিংসের পক্ষে খেলেছেন। ১ জানুয়ারি, ২০০৫ তারিখে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড একাদশ বনাম জিম্বাবুয়ীয় একাদশের মধ্যকার খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান।

২০০৫ সাল থেকে বাংলাদেশের পক্ষে টেস্ট, ওডিআই ও টি২০আইয়ে অংশ নিচ্ছেন। ২০০৫ সালে হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দলের প্রথম ইংল্যান্ড সফরের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। সাসেক্সের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম অর্ধ-শতক করেন। এরপর, নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ১১৫ রানের ইনিংস হাঁকান। এরফলে, ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ পান।

লর্ডস টেস্টে অংশ নিয়ে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ২৬ মে, ২০০৫ তারিখে ‘ক্রিকেটের স্বর্গভূমি’ হিসেবে খ্যাত লন্ডনের লর্ডসে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলার স্বাদ আস্বাদন করেন। শাহাদাত হোসেনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। প্রথম ইনিংসে দলীয় সংগ্রহ তেমন ভালো না হলেও মাত্র তিনজন ব্যাটসম্যানের অন্যতম হিসেবে দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করেছিলেন। এ টেস্টে কেবলমাত্র ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ইনিংস ও ২৬১ রানে স্বাগতিক দল জয়লাভ করে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। তবে, পায়ের গোড়ালীতে আঘাতের কারণে সিরিজের বাদ-বাকী খেলাগুলোয় অংশ নিতে পারেননি।

মে মাসে দুই টেস্ট খেলার পর ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ছয়টি ওডিআইয়ে অংশ নেন। অথচ, ২০-সদস্যের প্রাথমিক দলে ঠাঁই পাননি। দলের নিয়মিত উইকেট-রক্ষক খালেদ মাসুদের সহকারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। তবে, দলে অন্তর্ভুক্তির ফলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনায় দৃঢ় প্রত্যয়ীভাব তুলে ধরতে সক্ষম হন।

মার্চ, ২০০৬ সালে বগুড়ায় উদ্বোধনী টেস্টে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হন। কিন্তু, মুত্তিয়া মুরালিধরন ও মালিঙ্গা বান্দারা’র স্পিন বোলিংয়ে খুব কমই নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছিলেন। পরের কয়েক মাস মাঠের বাইরে অবস্থান করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নেয়ার পরবর্তী কয়েক বছর নিজেকে তেমন মেলে ধরেননি। ৮ মার্চ, ২০০৬ তারিখে পরের টেস্ট খেলেন। এরপর, আবারও এক বছরের অধিক সময় টেস্ট দলের বাইরে ছিলেন ও ৩ জুলাই, ২০০৭ তারিখে পরবর্তী টেস্ট খেলার সুযোগ পান।

উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে ৬ আগস্ট, ২০০৬ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের পক্ষে প্রথমবারের মতো একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেন। নিজস্ব প্রথম অর্ধ-শতক হাঁকান। চমৎকার ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ দলে নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা পান। এছাড়া, উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতে থাকেন। ডিসেম্বর, ২০০৬ সালে নিজ দেশে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ দুইটি ওডিআই খেলার জন্যে আমন্ত্রণ বার্তা লাভ করেন। ঐ বছরের শেষদিকে প্রথমবারের মতো টি২০আইয়ে অংশ নেন। ২৮ নভেম্বর, ২০০৬ তারিখে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হন।

টেস্টের তুলনায় ওডিআইয়ে সূচনায় নেমে বেশ ভালো খেলেন। ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ সালে হারারেতে প্রথম অর্ধ-শতকের সন্ধান পান। ক্রমাগত আঘাতের কবলে পড়া খালেদ মাসুদকে পাশ কাটিয়ে দলের প্রথম পছন্দের উইকেট-রক্ষকের মর্যাদা পান। ২০০৭ সালে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে অনুষ্ঠিত আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় দলের সদস্য হন। তবে, বিশ্বকাপ শেষে পাকিস্তান সফরে ওডিআই সিরিজে তাঁর পরিবর্তে ধীমান ঘোষকে খেলানো হয়। এশীয় দেশগুলোর বিপক্ষে ভালো ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করলেও দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তেমন সফল ছিলেন না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মোহাম্মদ আশরাফুলের সাথে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে রেকর্ডসংখ্যক ১৯১ রান তুলেন। আরও কয়েকটি অর্ধ-শতরান সংগ্রহের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে বাংলাদেশ দলের সহঃঅধিনায়কের মর্যাদা দেয়া হয়। উল্লেখযোগ্য ও ক্রমাগত ব্যাটিং সাফল্যের কারণে বাংলাদেশ দলে নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা পান। এছাড়াও, শীর্ষ উইকেট-রক্ষক হিসেব তাঁকে চিত্রিত করা হয়।

২০০৮-০৯ মৌসুমে ছন্দ ফিরে পান। প্রচণ্ড চাপের মাঝে থেকেও নিজেকে সংযত রাখতেন। ওডিআইয়ে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার মান নিচেরদিকে চলে যেতে থাকলেও ২০০৯ সালে পুণরায় নিজেকে মেলে ধরেন। জিম্বাবুয়ে সফরে ওডিআইয়ে অভিষেক শতক হাঁকানো থেকে অল্পের জন্যে বঞ্চিত হন।

বেশ কিছু বড় ধরনের কার্যকরী রান সংগ্রহ করলেও তিন অঙ্কের কোটা স্পর্শের জন্যে ছয় বছর অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয়। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম শতরানের ইনিংসের সন্ধান পান। ধারাবাহিকতা না থাকায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বড় ধরনের রান সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতার কবলে পড়তে হয়। তাসত্ত্বেও, শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে দলে পাকাপোক্ত করে রেখেছিলেন।

আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনের প্রথম কয়েক বছরে ধারাবাহিক খেলা প্রদর্শন না করার বিষয়ে মন্তব্য করেন যে, ‘৩-৪ নম্বরের ন্যায় শীর্ষসারিতে, এমনকি ৫ বা ৬ নম্বরে খেলার সুযোগ খুব কমই পেয়েছি। অনেকবার ৭-৮ নম্বরে এমনকি ৯ নম্বরে পর্যন্ত ব্যাটিং করতে হয়েছে। একজন নতুন খেলোয়াড়ের পক্ষে এ ধরনের অবস্থানগুলোয় ভালোমানের ক্রীড়া নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখা ভীষণ কঠিন বিষয়। আমি বড় ধরনের মারে অক্ষম কিংবা আমার বয়স ২৫-২৮ নয়। অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকাকালীন শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পেরেছি ও আমি ঐ অবস্থানের উপযোগী। তবে, জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত হবার পর আমাকে মাঝারিসারিতে নীচেরদিকে এমনকি কয়েকবার একেবারেই নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতে নামানো হয়েছে।’

উইকেটের পিছনে অবস্থান করেও নিজের প্রতিভার কথা জানান দেন। আইসিএল থেকে ধীমান ঘোষের প্রত্যাবর্তনের পরও বাংলাদেশের প্রথম পছন্দের উইকেট-রক্ষকের মর্যাদা লাভে সচেষ্ট ছিলেন। নিচেরসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে অন্যতম সেরা খেলোয়াড়দের অন্যতম হন।

টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে ধীরলয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। তবে, ২০০৮-০৯ মৌসুমে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে পড়েও ছন্দ ফিরে পান। এক বছর মাঠের বাইরে অবস্থান করলেও টেস্ট দলে ফিরে আসেন। নিজস্ব তৃতীয় টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮০ রান তুলে বাংলাদেশ দলের পরাজয় রুখতে পারেননি। এরপর থেকে দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা পান।

ওডিআইয়ে ব্যাটসম্যান হিসেবে তেমন ভালো করতে না পারলেও ২০০৯ সালে নিজের সেরা ছন্দে ছিলেন। জিম্বাবুয়ে সফরে অল্পের জন্যে নিজস্ব প্রথম শতরান থেকে বঞ্চিত হন। টেস্ট অভিষেকের পাঁচ বছর পর জানুয়ারি, ২০১০ সালে শক্তিধর ভারতের বিপক্ষে প্রথম শতক হাঁকান। বলের দিক থেকে বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের মধ্যে দ্রুততম করেন। তবে, ঐ খেলায় দলের পরাজয় রুখতে পারেননি। এরপর থেকেই দলের চালিকাশক্তিতে পরিণত হন ও বেশ কয়েকবার সহঃঅধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। পরের বছর ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে টেস্ট ও ওডিআই সিরিজে বিপর্যয়কর ফলাফলের প্রেক্ষিতে সাকিব আল হাসানকে অধিনায়কত্ব করা থেকে বিরত রাখা হয় ও তাঁকে দলের নেতৃত্বভার প্রদান করা হয়। উইকেটের পিছনে অবস্থান করে অনর্গল বকবক করতে থাকেন।

২০১১ সালে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরকালীন বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম খেলায় ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। টি২০আই সিরিজে দল জয়লাভ করলেও ওডিআইয়ে পরাজিত হয় তাঁর দল। কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায় তাঁকে ‘খ’ শ্রেণী থেকে ‘ক’ শ্রেণীভূক্ত করা হয় ও পরবর্তীতে ‘ক+’ শ্রেণীতে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৪ সালে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে অধিনায়ক হিসেবে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের অপ্রত্যাশিত পরাজয়ের ফলে দলের নেতৃত্ব ভার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয় ও সাকিব আল হাসানকে অধিনায়কত্ব করা হয়।

২০১২ সালের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বে ছিলেন। তিন খেলার দুটিতে জয় পেয়ে প্রথমবারের মতো চূড়ান্ত খেলায় নিয়ে যান। কিন্তু, পাকিস্তানের বিপক্ষে পরাজয়বরণ করে বাংলাদেশ দল। এপ্রিলে বিসিবি কর্তৃক কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ‘এ+’ শ্রেণীর চুক্তি নবায়ণ করা হয়। ১১ মার্চ, ২০১৩ তারিখে গলেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্বি-শতক রানের ইনিংস খেলার কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। এরফলে, মোহাম্মদ আশরাফুলের গড়া ১৯০ রানের রেকর্ড ম্লান হয়ে যায়। শুধুমাত্র সহজাত প্রকৃতির ব্যাটসম্যানেরই পরিচয় দিচ্ছেন না, পাশাপাশি খেলার প্রতি দায়বদ্ধতার প্রশ্নে অন্যতম সেরা উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যানের পরিচিতি বহন করছেন।

২০১৩ সালে বাংলাদেশী দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে যান। ২৫ এপ্রিল, ২০১৩ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্ট খেলেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ৬০ ও ৯৩ রান সংগ্রহসহ চারটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ ও দায়িত্বশীল ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ১৪৩ রানে জয় পেলে সিরিজে সমতা আনতে সমর্থ হন।

৮ মে, ২০১৩ তারিখে অধিনায়কত্ব থেকে অব্যহতি নেন। তবে, কয়েকদিন পরই ভুলের বিষয়টি ঘোষণা করেন। ৩ জুলাই, ২০১৩ তারিখে বিসিবি থেকে ঘোষণা করা হয় যে, ঐ বছরের শেষদিন পর্যন্ত অধিনায়ক হিসেবে থাকবেন। অক্টোবর ও নভেম্বর, ২০১৩ সালে নিজ দেশে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অসাধারণ খেলা উপহার দেন। প্রথম দুই টেস্টে ড্র করেন, তিনটি ওডিআইয়ের সবকটিতে বাংলাদেশ দল জয়ী হয় ও একমাত্র টি২০আইয়ে পরাভূত হয়।

২০১৩-১৪ মৌসুমে নিজ দেশে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ৯ অক্টোবর, ২০১৩ তারিখে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ৭ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ২০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাট হাতে নিয়ে মাঠে নেমে ৬৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ ও একটি স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে নিজেকে জড়ান। সোহাগ গাজী’র অনবদ্য অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

২০১৪ সাল থেকে নিজের সেরা খেলা প্রদর্শনে সচেষ্ট হন। ঐ বছরে ওডিআইয়ে ৪৪ গড়ে রান পান ও ২০১৬ সালে মাত্র সাত খেলায় অংশ নিয়ে ৩৯.৬০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ব্যাটিং গড় ৫০-এর উপরে নিয়ে যান। এ সময়ে দুইটি শতরান ও দশটি অর্ধ-শতরান করেছিলেন। ২০২০ সালের শুরুতে মাত্র দুইটি ওডিআইয়ে অংশ নিয়ে একটিতে অর্ধ-শতক পেয়েছেন।

২০১৪ সালের এশিয়া কাপের শুরুতে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওডিআইয়ে শতরান করেন। তবে, ঐ খেলায় আঘাতের কারণে স্বাভাবিক খেলা উপহার দিতে পারেননি। পরের খেলায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩২ রানে স্বাগতিক বাংলাদেশ দল পরাজিত হয়। ২০১৪ সালের বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতায় অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। তবে, স্বাগতিক দল হিসেবে বাছাই পর্ব থেকে উত্তরণের পর চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় সব কটি খেলায় পরাজিত হয়।

আগস্ট, ২০১৪ সালে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে বাংলাদেশ দল কোন খেলায় জয়লাভে সক্ষমতা প্রদর্শন করতে না পারলেও নিজস্ব তৃতীয় শতক হাঁকিয়েছিলেন। সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সালে ওডিআইয়ে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে অধিনায়ক ও তাঁকে দীর্ঘ সংস্করণের খেলায় নেতৃত্ব দেয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। এরপর নিজ দেশে অনুষ্ঠিত ওডিআই সিরিজে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। পাঁচ খেলায় অংশ নিয়ে দুইটি অর্ধ-শতরানের ইনিংসসহ ২১৩ রান তুলেন। এরফলে, ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ব্যাট হাতে নিয়ে ব্যক্তিগত সেরা কুশলতার স্বাক্ষর রাখেন। ছয় খেলায় ২৯৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাহমুদুল্লাহকে সাথে নিয়ে ১৪১ রানের জুটি গড়ে ঐ প্রতিযোগিতার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ দলকে কোয়ার্টার-ফাইনালে নিয়ে যান।

বিশ্বকাপ পরবর্তী খেলাগুলোয়ও ধারাবাহিক ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করতে থাকেন। তিনটি ওডিআইয়ে অংশ নিয়ে ২২০ রান তুলে সফরকারী পাকিস্তান দলকে ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত করতে সবিশেষ ভূমিকা রাখেন। এছাড়াও, নিজ দেশে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫০-ওভারের খেলায় দলের সাফল্যে অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিলেন।

২০১৫ সালে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। ২০১৬ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতায় নাজুক মুহূর্তের সাথে জড়িত থাকেন। তন্মধ্যে, স্বাগতিক দলের বিপক্ষে অবশ্যম্ভাবী জয়ের পর্যায়ে নিয়ে যান। হার্দিক পাণ্ড্য’র বলে উপর্যুপরী বাউন্ডারি হাঁকান ও বাংলাদেশ দলের ৩ বলে মাত্র ২ রানের দরকার পড়ে। ঐ খেলায় মাত্র এক রানে পরাজিত হয় বাংলাদেশ দল ও সুপার টেন পর্বের কোন খেলায় জয় পায়নি।

বাংলাদেশ সফররত ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে ওডিআই সিরিজে ১-২ ব্যবধানে পরাভূত হয় স্বাগতিক দল। দীর্ঘ সংস্করণের খেলায় দলকে পরিচালনা করে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ দল ২২ রানে পরাজিত হয়। তবে, দ্বিতীয় খেলায় বাংলাদেশ সদর্পে জয় তুলে নেয় ও ১-১ ব্যবধানে সিরিজ ড্র করে। এ পর্যায়ে এটিই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয় ছিল।

নিজ দেশের বাইরে খেলে বাংলাদেশ দলের সর্বাপেক্ষা অপর অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সাথে পঞ্চম উইকেটে ৩৫৯ রানের রেকর্ড গড়েন। তন্মধ্যে, নিজে করেন ১৫৯ রান। ৫৯৫ রানের পর্বতসম রান তুলে বাংলাদেশ দল। তবে, সাব্বির রহমানের সাথে খেলাকালীন টিম সাউদি’র বল হেলমেটের পিছনে আঘাত করলে মাঠের বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য হন। ঐ খেলায় বাংলাদেশ দল পরাজিত হওয়াসহ অংশ নিতে না পারা দ্বিতীয় টেস্টেও পর্যদুস্ত হয়।

২০১৭ সালে হায়দ্রাবাদে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র টেস্টে রবিচন্দ্রন অশ্বিনরবীন্দ্র জাদেজা’র ন্যায় বোলারদের মোকাবেলা করে নিজস্ব পঞ্চম শতক হাঁকান। তাসত্ত্বেও খেলায় বাংলাদেশ দল পরাজয়বরণ করেছিল। এক মাস পর বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়ে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। প্রথম টেস্টে বিরাট ব্যবধানে পরাজিত হলেও দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ দল জয় পায়। এ টেস্টটি বাংলাদেশের শততম টেস্ট ছিল। একই খেলায় টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৪১তম ও বাংলাদেশের প্রথম উইকেট-রক্ষক হিসেবে ১০০ টেস্ট ডিসমিসালের সাথে নিজেকে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রাখেন। একই বছর প্রথম বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যে-কোন স্তরের ক্রিকেটে শতক হাঁকানোর গৌরব অর্জন করেন।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণের পূর্বে আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রি-দেশীয় সিরিজে ব্যাট হাতে অপূর্ব ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন। চূড়ান্ত খেলায় বল প্রতি ৪৫ রান তুলে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান। এছাড়াও, আইসিসি র‍্যাঙ্কিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে টপকে বাংলাদেশ স্থান করে নেয়। ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও বেশ ভালো করেন। চার ইনিংসের দুইটিতে অর্ধ-শতক করেছিলেন। বাংলাদেশ দল সেমি-ফাইনালে বিদেয় নিলেও সামগ্রীকভাবে দলের সফলতার অন্যতম ভাগীদার ছিলেন।

২০১৭-১৮ মৌসুমে বাংলাদেশী দলকে নেতৃত্ব দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। এ সফরে বাজে সময় অতিবাহিত করেন। দুই টেস্ট, তিন ওডিআই ও দুইটি টি২০আইয়ের প্রত্যেকটিতেই ধবল ধোলাইয়ের শিকারে পরিণত হয় বাংলাদেশ দল। টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে সকল দিক থেকেই চাপ সহ্য করতে হয়। তাসত্ত্বেও সাদা-বলের খেলায় সেরা ছন্দে ছিলেন। তিন খেলার সিরিজটিতে একটি শতক ও একটি অর্ধ-শতক করেছিলেন। ঐ সফরের পর অধিনায়কত্ব থেকে তাঁকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

৬ অক্টোবর, ২০১৭ তারিখে ব্লোমফন্তেইনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৩৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৭ ও ২৬ রান সংগ্রহ করেন। কাগিসো রাবাদা’র অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ২৫৪ রানে জয়লাভ করলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

পাকিস্তানে তিনটি টি২০আই ও এক টেস্টে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানান। এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে অংশ নেয়ার পূর্বে শারীরিক সক্ষমতা যাঁচাইয়ের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়াসহ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেয়ার কথা জানানো হয়।

ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ব্যক্তিগত সফলতার পরিচয় রাখেন। কোভিড-১৯ বৈশ্বিক অতিমারী শুরু হবার পূর্বে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ টেস্টে ২০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। টেস্টে এটি তার তৃতীয় দ্বি-শতরানের ইনিংস ছিল। প্রথমটি ২০১৩ সালে গলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ও দ্বিতীয়টি ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেছিলেন।

ইতোমধ্যে ওডিআইয়ে প্রায় আট হাজার রান সংগ্রহ করেছেন। ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ তারিখে দুবাইয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৪৪ রান করেছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ৯৮টি টেস্টে অংশ নিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার রান সংগ্রহ করেছেন। ১১ নভেম্বর, ২০১৮ তারিখে মিরপুরে অনুষ্ঠিত সফররত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২১৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে খেলেন। পাঁচ নম্বর অবস্থানে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫৮৯ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে ৪২১ বল মোকাবেলা করে ১৮টি চার ও একটি ছক্কা সহযোগে এ রান তুলেন। বিশ্বকাপ ক্রিকেটেও বেশ ভালো করেন। ৫২.৩০ গড়ে ৩৬৭ রান পেয়েছেন। তন্মধ্যে, একটি শতক ও দুইটি অর্ধ-শতক ছিল ও ৯২.৬৮ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন।

টেস্ট ও ওডিআইয়ে আরও মনোনিবেশ ঘটানোর লক্ষ্যে টি২০আই থেকে অবসর গ্রহণের ঘোষণা করেন। ২০১২ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় ছয়টি দলকে নিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের সূত্রপাত ঘটে। দূরন্ত রাজশাহীর ‘প্রতীকি খেলোয়াড়ের’ মর্যাদা পান। দলকে সেমি-ফাইনালে নিলেও বরিশাল বার্নার্সের কাছে পরাভূত হয়। ঐ মৌসুমে ১১ খেলা থেকে ২৩৪ রান পান।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ সম্পর্কে তাঁর ভগ্নীপতি হন। হাবিবুল বাশার সতীর্থ খেলোয়াড়দেরকে নিয়ে সর্বকালের সেরা বাংলাদেশী টেস্ট একাদশ গঠন করেন। তন্মধ্যে, তাঁকেও এ তালিকায় ঠাঁই দিয়েছেন।

২০২২ সালে নিজ দেশে দিমুথ করুণারত্নে’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ২৩ মে, ২০২২ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। চমৎকার ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হন। ১৭৫* ও ২৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তন্মধ্যে, প্রথম ইনিংসে ষষ্ঠ উইকেটে উইকেট-রক্ষক লিটন দাসের (১৪১) সাথে ২৭২ রানের জুটি গড়েন। তবে, অসিত ফার্নান্দো’র অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ১০ উইকেটে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।

২০২৩-২৪ মৌসুমে নিজ দেশে টিম সাউদি’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে মিরপুরে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ৩৫ ও ৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলায় বাংলাদেশ দল ৪ উইকেটে পরাজিত হলে সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে ড্রয়ে পরিণত হয়।

২০২৪ সালে নাজমুল হোসেন শান্ত’র নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী দলের অন্যতম সদস্যরূপে পাকিস্তান গমন করেন। ২১ মার্চ, ২০২৪ তারিখে রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক পাকিস্তানে বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অপূর্ব ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। একবার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে ১৯১ রানের মনোমুগ্ধকর ইনিংস উপহার দেন। এ পর্যায়ে লিটন দাসের (৫৬) সাথে ষষ্ঠ উইকেটে ১১৪ ও সপ্তম উইকেটে মেহেদি হাসান মিরাজের (৭৭) সাথে ১৯৬ রানের জুটি গড়েন। তাঁর অসাধারণ শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ১০ উইকেটে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।

২০২৪-২৫ মৌসুমে নিজ দেশে এইডেন মার্করামের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ২১ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে মিরপুরে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৬০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ১১ ও ৩৩ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে কাগিশো রাবাদা’র শিকারে পরিণত হন। কাইল ভেরিনের অসাধারণ শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ৭ উইকেটে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

২০২৫ সালে নাজমুল হোসেন শান্ত’র নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী দলের অন্যতম সদস্যরূপে শ্রীলঙ্কা সফরে যান। ২৫ জুন, ২০২৫ তারিখে কলম্বোয় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৩৫ ও ২৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। পথুম নিশাঙ্কা’র অসাধারণ শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ৭৮ রানে পরাজিত হলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।