Skip to content

২০১৫ বাংলাদেশ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ১ম টেস্টের প্রতিবেদন

1 min read

২০১৫ সালে হাশিম আমলা’র নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবক দল বাংলাদেশ গমন করে। ২১ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত সিরিজের প্রথম টেস্টটি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। টসে জয়লাভ করে দক্ষিণ আফ্রিকা দল ব্যাটিংয়ে নামে। বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়।

গেল ছয় মাসের মধ্যে প্রথম টেস্ট খেলতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা দল খেলার চতুর্থ দিন পর্যন্ত গোটানো ছিল। দৃশ্যতঃ, বিশ্বের এক নম্বর দলটি শুরুতে বেশ জবুথবু অবস্থায় থাকে। পরবর্তীতে খোলস ছেড়ে খেলতে শুরু করলেও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়। এ ড্রয়ের ফলে অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের শতভাগ পরাজয়ের রেকর্ড বহাল থাকে। তবে, খেলার অবস্থানগত দিক বিবেচনা করলে তারা আরও ভালো খেলা প্রদর্শনে আশাবাদী ছিল।

শুরুতে বাংলাদেশ দল বল হাতে নিয়ে দৃষ্টিনন্দন ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে অগ্রসর হয় ও মোটের উপর বেশ আক্রমণাত্মক ছিল। মধ্যাহ্নবিরতি পর্যন্ত সফরকারীরা ১০৪/১ তুললে হাশিম আমলা’র ব্যাটিং করার সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা ও উপযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। তবে, বাংলাদেশ দলও কৌশল বদলায়। মোহাম্মদ শহীদ উপর্যুপরী সাতটি মেইডেন লাভ করেন। তন্মধ্যে, পাঁচটি করেন একই স্পেলে। প্রায় সবটুকুই চাপ ও বড় ধরনের রান সংগ্রহের প্রত্যয় নিয়ে সামলে চলা ফাফ ডু প্লিসি’র (৪৮) ছিল। বাংলাদেশের নতুন ১৯ বছর বয়সী বামহাতি বোলার মুস্তাফিজুর রহমান তাঁর সুইঙ্গার ও কাটার প্রয়োগে মাঝারিসারিতে চার বল থেকে তিন উইকেট তুলে নেন। ড্রাইভ মারতে ব্যর্থ হাশিম আমলা তাঁর প্রথম টেস্ট শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। জ্য-পল ডুমিনি তাঁর বল আটকাতে না পারলে এলবিডব্লিউতে শূন্য রানে বিদেয় নেন। কুইন্টন ডি কক (০) কোনক্রমে তাঁর হ্যাট্রিক থেকে রক্ষা পেলেও অফ-স্ট্যাম্পের দিকে আউট-সুইঙ্গারে নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন।

বাংলাদেশী সিমারদের মধ্যে টেস্ট অভিষেকে ২০০০-০১ মৌসুমে বুলাওয়েতে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মঞ্জুরুল ইসলামের ৬/৮১ লাভের পর মুস্তাফিজুর রহমান ৪/৩৭ লাভ করে দ্বিতীয় সেরার মর্যাদা পান। সৌভাগ্যবশতঃ তেম্বা বাভুমা (৫৪) খেলাটিকে যথাসম্ভব এগিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করেছিলেন। তবে, তিনি রান সংগ্রহের চেয়ে বল ঠেকাতেই অধিক মনোযোগী ছিলেন। দলের স্বার্থে যথাসম্ভব সবকিছু করেন ও সবশেষে বিদেয় নেন।

বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথমবারের মতো বড় ধরনের রান সংগ্রহ করে ও প্রতিপক্ষের চেয়ে ৭৮ রানে এগিয়ে যায়। তারা হয়তোবা আরও রান তুলতে পারতো। মাঝে-মধ্যে বামহাতে স্পিন বোলিংয়ে নামা ডিন এলগারের ফুল টস বল মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হলে তামিম ইকবাল ৫৭ রানে বিদেয় নেন। সাইমন হারমারের বলে মিড-উইকেট অঞ্চলে উঁচুতে তুলে সাকিব আল হাসান (৪৭) নিজের উইকেট খোঁয়ান। একদিনের সিরিজে রাইলি রুশো’র সাথে ধাক্কাধাক্কির পর ডি ককের সাথে তামিমের তর্কাতর্কির ঘটনা অধিনায়ক থামালেও তিনি ম্যাচ ফি’র তিন-চতুর্থাংশ জরিমানা দেন। অপরদিকে, দুই তরুণ দর্শক দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়দেরকে লক্ষ্য করে বর্ণবাদী কটুকথার চিৎকারজনিত আচরণে কারণে নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের আটকায়।

দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৭৯/৪ হলে সফরকারীরা চাপে পড়ে। তবে, পরদিন সকালে ডেল স্টেইন তাঁর বোলিংয়ে কিছুটা ছন্দ ফিরে পান ও স্বাগতিকদের শেষ ছয় উইকেট ১৩১ রানে পড়ে যায়। চাবিরতির পর মাত্র ১২ ওভার খেলা চালিয়ে যাওয়া সক্ষম হয়। আবহাওয়া বিগড়ানোর পূর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন উদ্বোধনী জুটি স্টিয়ান ফন জিল (৩৩) ও ডিন এলগার (২৮) দলকে ১৭ রানে এগিয়ে নিয়ে যান। মুস্তাফিজুর রহমান ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।